আধুনিক দাসত্বের ফাঁদে বিশ্বের ৪ কোটি শ্রমিক

0
হট

হট

বিশ্বব্যাপী ৪ কোটি শ্রমিক গেলো বছরের হিসাবে আধুনিক দাসত্বের ফাঁদে আটাকে আছে। তাদের অর্ধেক শ্রমিক ঋণের কারণে তাদের শ্রম সস্তায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এখনও বিশ্বব্যাপী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১৫ কোটি ২০ লাখ। জাতিসংঘের সাধারণ সভাকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশন গতকাল নিউইয়র্ক থেকে আধুনিক দাসত্ব এবং শিশু শ্রমিক পরিস্থিতি নিয়ে পৃথক দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, আধুনিক দাস শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে নারীরা। তাদের মধ্যে ৭১ ভাগ নারী যাদের সংখ্যা প্রায় প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ। যৌনকর্মীদের ৯৯ ভাগ বাধ্যতামূলক এ পেশায় শ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে। জোরপূর্বক বিবাহে বাধ্য হচ্ছে ৮৪ ভাগ নারী শ্রমিক। শিশু শ্রমিকদের নিয়ে করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ১৫ কোটি ২০ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে যাদের বয়স ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে। শিশু শ্রমের ৭০ দশমিক ৯ ভাগ কৃষি খাতে নিয়োজিত। প্রতি পাঁচ জনের একটি শিশু নিয়োজিত রয়েছে সেবা খাতে। শিশু শ্রমিকদের ১১ দশমিক ৯ ভাগ শিল্পে নিয়োজিত।

প্রতিবেদনের বিষয়ে আইএলও মহাপরিচালক গাই রাইডার উল্লেখ করেছেন, নাটকীয় পরিবর্তন ছাড়া এ অবস্থার মধ্য দিয়ে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন সম্ভব নয়। ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এন্ড্রু ফরেস্ট উল্লেখ করেছেন, আধুনিক বিশ্বে ৪ কোটি দাস শ্রমিকের তথ্য আমাদের লজ্জিত করে। এ অবস্থা পরিবর্তনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকার, সুশিল সমাজসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৪৯ লাখ শ্রমিক বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে। এদের মধ্যে কৃষি খামার, মাছ ধরার জলযান, যৌন বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য। তারা কিছু খাবার এবং পরিধেয় বস্ত্র শ্রমের বিনিময়ে পেয়ে থাকে। জোরপূর্বক শ্রমে নিয়োজিত শ্রমিকদের ৪০ ভাগ নিয়োগকারী রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। ২০১৬ সালের হিসাবে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৫৪ লাখ বলপূর্বক বিবাহের শিকার হয়েছে। শুধু নারীরাই নয়, পুরুষদেরও জোরকরে বিবাহ দেওয়ার ঘটনা ঘটছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের যে কোন সময়ে অন্তত আড়াই কোটি মানুষ অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষ ব্যক্তি খাতে শ্রমের মাধ্যমে শোষণের শিকার হয়েছে। পারিবারিক কাজ, নির্মাণ খাত, কৃষি খাতেই এ সব শ্রমিকের ব্যবহার বেশি। এ সময়ে ৫০ লাখ মানুষ জোর প্রয়োগে যৌনকর্মে বাধ্য হয়েছেন। একই সময়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ সরকারি ব্যবস্থাপনায় চাপ প্রয়োগের ফলে শ্রম দিতে বাধ্য হয়েছেন।

আইএলও উল্লেখ করেছে, বিশ্বব্যাপী ৫৪টি দেশের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্বের মধ্যে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে এই আধুনিক দাসত্বের হার সবচেয়ে বেশি। দাস শ্রমিকদের ৬২ ভাগই এই অঞ্চলে বাস করছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *