বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি : নেপথ্যে যার অবদান

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভের পর অনেকের চেয়ে আনন্দটা একটু বেশিই ছিল রোকেয়া খাতুনের। কারণ ছয় বছর আগে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ তিনিই প্রথম ইউনেস্কোতে তুলে ধরেন। একটি জাতি কী করে এক জাদুকরী ভাষণেই একটি দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পারে, সেটাই উপস্থাপন করেছিলেন তিনি।
রোকেয়া খাতুন ইডেন কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। এর আগে গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ছিলেন তিনি। পরে ২০০৭ সালে প্রেষণে বদলি হয়ে প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোয়। ২০১১ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় কোরিয়ান ইউনেস্কো আয়োজিত ‘সেকেন্ড রিজিওনাল ট্রেনিং ওয়ার্কশপ অন দ্য ইউনেস্কো, মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন রোকেয়া। তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ঐতিহ্যগত গুরুত্ব আছে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে বাংলাদেশের এমন গুরুত্বপূর্ণ নথি বা প্রামাণ্য দলিল উপস্থাপনের।
এ ব্যাপারে রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা শাহ মিজান শাফিউর রহমান আমাকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, পৃথিবীর বুকে একমাত্র একজন নেতার একটি ভাষণই গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। সেটা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। ইউনেস্কোর তালিকায় ঠাঁই পেতেও যে ভাষণের রয়েছে পর্যাপ্ত গ্রহণযোগ্যতা ও ঐতিহাসিক প্রভাব।
এরপর পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে রোকেয়া যোগ দেন ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় কোরিয়ান ইউনেস্কো আয়োজিত ‘ইউনেস্কো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ডে’। অধ্যাপক রোকেয়া জানান, সেখানে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় ৭ মার্চের ভাষণের ওপর আমার উপস্থাপনা প্রশংসা পায়। এর মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের চেয়ারপারসন রে অ্যাডমন্ডসন আমার উপস্থাপনের ভূয়সী প্রশংসা করে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের গুরুত্ব উপস্থানে বেশকিছু মতামত ও পর্যবেক্ষণ দেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও বঙ্গবন্ধুর সেই জাদুকরী ভাষণের বিশ্বস্বীকৃতি বাংলাদেশকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিল। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
আমি সেই প্রয়াসের ক্ষুদ্র অংশ হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। যখন প্রথম এ আনন্দ ঘোষণা শুনেছি, তখনই আনন্দে আত্মহারা হয়েছি।