যুবলীগ সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে – শেখ ফজলে শামস্ পরশ

বোরহান বাবুঃ যুবলীগ সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে – যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
আজ ০৯ মার্চ ২০২০ সোমবার কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কাপাসিয়া উপজেলা শাখা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন “যুবলীগ সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে”
সকাল ১০.০০টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সম্মেলন উদ্ভোধন করেন-গাজীপুর জেলা শাখা যুবলীগের আহ্বায়ক এস এম আলতাফ হোসেন, এসময় বেলুন ও কবুতর ওড়ানো হয়। পবিত্র কোরআন তেলোয়াত, গীতা পাঠের মাধ্যমে আলোচনা পর্বের শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ, বরেণ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এম পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, প্রধান বক্তা মোঃ সেলিম আজাদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক, গাজীপুর জেলা যুবলীগ, সভাপতিত্ব করেন-মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদ সেলিম, সভাপতি কাপাসিয়া উপজেলা শাখা যুবলীগ। সঞ্চালনা করেন-মোঃ সাখাওয়াত হোসেন প্রধান, সাধারণ সম্পাদক কাপাসিয়া উপজেলা শাখা যুবলীগ।
বিকাল ৩.০০টায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা “মুজিববর্ষে গৃহহীনদের ঘর দাও” আহ্বানের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ গাজীপুর মহানগরাধীন গাছা থানার ৩৪ ও ৩৮ নং ওয়ার্ডে গৃহহীনদের মাঝে ঘর দানের উদ্বোধন করেন- যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন- “বঙ্গবন্ধু যে দেশ প্রেমের উদাহরণ রেখে গেছেন আজকের যুবলীগ হবে বাংলাদেশের আমজনতা বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের। যুবলীগ বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।“
তিনি আরও বলেন-“আমরা ইমেজ সংকটের সময়ে যুবলীগের দায়িত্ব নিয়েছি। বিগত সময়ে কিছু সমস্যার সম্মুখিন হয়েছিল। এসব থেকে আমাদের সতর্কতার সাথে পথ চলতে হবে, আমাদের প্রতি জনগণের যে বিশ্বাস এসেছে জনগণের সেই বিশ্বাসকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। আপনাদের প্রতি যেন কোন কালিমা না লাগে, আপনাদের নিষ্ঠার ও আদর্শের সাথে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। আত্মঅহমিকায় বলিয়ান হওয়া যাবে না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি ও বুকে লালন করি, আদর্শ ভিত্তিক শক্তি আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সততাই সবচেয়ে বড় শক্তি। মানুষের মৌলিক চাহিদা ও অধিকার নিশ্চিতে আমাদের কাজ করতে হবে। নেত্রী গৃহহীনদের তালিকা করতে বলেছেন। কেউই এই বাংলাদেশে গৃহহীন থাকবে না। এই দেশের মানুষের প্রতি আমাদের অর্থাৎ যুবলীগের দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। আমার বাবার থেকে এই দেশকে ভালবাসতে শিখেছি। তিনি আরও বলেন-মুজিব বর্ষ উদযাপন কালে আমরা যেন বিনয়ী হই, আমরা যেন জনগণকে কষ্ট বা পীড়া নেই। ৭ই মার্চের ভাষন বাজাতে দেওয়া হতো না। মিথ্যা কখনো স্থায়ী হতে পারে না। মিথ্যার মাধ্যমে গড়ে তোলা একটি দল রাজাকারের, মা বোনের ইজ্জত লুষ্ঠনকারীদের গাড়ীতে পতাকা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর যদি সোনার ছেলে তৈরী করতে পারি তাহলে সোনার বাংলা একদিন হবেই। যুবলীগের প্রতিটি ছেলেকে সোনার ছেলে হয়ে উঠতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদী হতে হবে। দেশপ্রেম থাকতে হবে। আদর্শহীন দেশকে ধ্বংস করতে পারে। ব্যক্তিগত লোভের উর্ধ্বে থাকতে হবে। যুবলীগ দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সাথে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। যুবলীগ সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।“
বরেণ্য অতিথির বক্তব্যে বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি যুবলীগ চেয়ারম্যান/সাধারণ সম্পাদক ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈমকে কাপাসিয়ায় স্বাগত জানিয়ে বলেন- যুবলীগের নতুন কমিটি আলোকিত করবে আমাদের কাপাসিয়াকে। ২০২০ সাল আমাদের জন্য ব্যতিক্রম একটি বছর, কারণ এখন থেকে ১০০ বছর পূর্বে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসলে বিদ্যুতের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, প্রতিটি স্কুলে নতুন নতুন বিল্ডিং। আমরা সৎ ও আদর্শবান থাকলে, ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারব। নেত্রীর কারণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ। নেত্রী আমাদের ডেল্টা প্লান আগামী ১০০ বছরের প্লান দিয়েছেন। আমরা মানবিক কাপাসিয়া গড়ব। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ ক্ষুদা ও দারিদ্র মুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু উদার ছিলেন ভালবাসতেন। আমরা যদি ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারি তাহলে আমাদের মধ্যে বিভেদ থাকবেনা। আমরা জনগণের সেবা করতে পারব, মানুষকে ভালবাসতে পারব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন-তাজউদ্দিন আহমেদ সাহেব জেলাখানায় প্রমান করেছেন তিনি বাংলাদেশের সাথে বেঈমানী করতে পারেন না ও আপনারাও বারবার নৌকায় ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করে বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানী করতে পারেন না। তিনি আরও বলেন-রিমি আপা আমরা আপনাকে সাথে নিয়ে যে সঠিক মানুষের কল্যাণে কাজ করতে, মদ, নেশায় আসক্ত নয়, চাঁদাবাজ নয় আমরা সেই নেতৃত্ব এই কাপাসিয়ায় ঘোষণা করব। সততাই শক্তি, মানবতাই মুক্তি, নেত্রীর এই শ্লোগান বুকে ধারণ করে। তিনি আরও বলেন-১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে মাদার অফ হিউম্যানিটি উপাধী লাভ করেন। তিনি বলেন আমি তাদের ফেলে দিতে পারি না। নেত্রীর প্রত্যয় বাংলাদেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। যদি আপনাদের কাছে টাকা না থাকে আমি দিব। তিনি আরও বলেন- যুবলীগে কোন খারাপ লোকের জায়গা হবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে যুবলীগ করতে হবে। যুবলীগ করতে হলে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। নব দিগন্তে সারা বাংলাদেশে সর্বনাশা ইয়াবার বিরুদ্ধে সুদ্ধি অভিযান চলবে। একটি সৎ মানুষের শক্তি হবে পাহাড় সমান। যুবলীগ চলবে সততার সাথে, মানবতার সাথে। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে মোঃ সাখওয়াত হোসেন সভাপতি ও রাজি ঘোষ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন।