অনাহারে, অর্ধাহারে,চলছে ইত্যাদির শিল্পী আকবরের দিন

করোনা মহামারিতে অভাব অনটন কষ্টে দিন কাটছে আকবরের । প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে না পারছেননা, তাই শারীরিক সমস্যাও বেড়ে গেছে অনেক । এখন অনাহারে, অর্ধাহারে, ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে আকবরকে। প্রথম রোজার দিন ঘরে কোনো চাল ছিলোনা । আকবরের স্ত্রী পাশের বাসা থেকে দুই কেজি চাল এনে খাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন ।এভাবে লকডাউনে আরও কত দিন থাকতে হয়, তার কোনো ঠিক নেই। কী হবে, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না আকবর।
গেল বছরের শুরুর দিকে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হয় আকবরকে। তাঁর অসুস্থতার খবর পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এরপর তাঁর পরিবারকে ডেকে ২০ লাখ টাকা অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টাকার মুনাফা হিসেবে তিন মাস পর পর ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তোলেন আকবর। ওই টাকার ১৬ হাজার ৩০০ টাকায় চলত তাঁর সংসার।
পরিবার নিয়ে আকবর ঢাকার মিরপুর ১৩ নম্বরে থাকেন। তাঁর বড় মেয়ে আছিয়া আকবর অথৈ হারম্যান মাইনর স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। মিরপুরের যে বাড়িতে তিনি থাকেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস বিলসহ মাসে তাঁদের ভাড়া দিতে হয় সাড়ে ১৩ হাজার, মেয়ের স্কুলের বেতন ২ হাজার ২০০ টাকা, সংসার খরচ ১০ হাজার টাকা, মেয়ের কোচিং ও তাঁর ওষুধের খরচ ৭ হাজার। করোনার কারণে গানের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোনো আয় নেই তাঁর।
‘মাসে দু-তিনটা অনুষ্ঠান করেন তিনি। অনুষ্ঠানভেদে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা সম্মানী পান। সংসার-ওষুধপত্র, মেয়ের খরচসহ কোনো রকমে হয়ে যেত তার। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ একটি অনুষ্ঠানে গান করেছেন, এরপর দুই মাসের বেশি ঘরে বসা। । গান না থাকলে তো আয়ও নাই।’
সংসারের পাশাপাশি শরীর নিয়ে ভীষণ কষ্টে আছেন বলে জানালেন আকবর। গত বছরের আগস্ট মাসে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যাওয়া হয়নি। এদিকে শরীরের অবস্থার অবনতিও হচ্ছে।
শরীরে ফোসকা এমন হয়েছে, সারা রাত ঘুমাতে পারেন না। ব্যাথায় ছটফট করেন সারা রাত। এদিকে লকডাউনে থেকে শুরু হয়েছে অভাব-অনটন ।
করোনার এই সময়ে পরিস্থিতি খারাপ দেখে স্ত্রীর কথায় পরিচিত দু-একজনের কাছে মুখ ফুটে সাহায্যের কথা বলেছিলেন আকবর। কেউ কেউ আশ্বাস দিয়েছেন, সাহায্য দেননি।