আওয়ামীলীগের হাত দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হবে : নাসিম

এস কে দেবঃ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি চক্রান্তকারীদের মধ্যে একজন, যারা পদ্মা সেতু হোক তা চায়নি। পদ্মা সেতু নিয়ে তার দেয়া বক্তব্যে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিশ্বব্যাংককে তিনি প্রভাবিত করেছেন, যাতে বাংলাদেশে তাদের টাকা না আসতে পারে এবং পদ্মা সেতু নির্মাণ না হয়।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ রাসেল গ্রাউন্ডে ডিজিটাল এলইডি ডিসপ্লে স্থাপনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
নাসিম বলেন, আওয়ামীলীগের হাত দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হবে। আর তার উপর দিয়েই খালেদা জিয়া পদ্মা পার হবেন। পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার চক্রান্ত আজ প্রমাণিত।
তিনি আরও বলেন, জনস্বার্থে স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য, পরামর্শ, উপদেশাবলী, সরকারের গৃহিত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিতকরণ এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই সব ডিজিটাল এলইডি ডিসপ্লে স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল এলইডি ডিসপ্লে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিভাগের সচিব ফয়েজ আহম্মদ, এসেনসিয়াল ড্রাগস কো: লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া প্রমুখ।
জনগণ আবার স্বাধীনতা স্বপক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক শক্তির দল আওয়ামীলীগকেই ক্ষমতায় বসাবে বলে আশা প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী ক্ষমতায় এলে দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা বাধাপ্রাপ্ত হবে। তারা দেশে আগের মতো জ্বালাও-পোড়াও, হত্যাকান্ড ও নৈরাজ্য শুরু করবে। বার্ন ইউনিট গড়ে তোলার পরিবর্তে পুড়িয়ে মানুষ মারবে। দেশের মানুষ সেই আতঙ্কিত দিনগুলির কথা ভুলে যায়নি। স্বাধীনতা বিরোধীদের পরাজিত করে একাত্তরে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি, জনগনের সমর্থনে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও আমরাই জয়ী হবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নের খন্ডচিত্র তুলে ধরে আওযামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশের সব সেক্টরেই উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মধ্যম আয়ের দেশের তালিকাভুক্ত হতে উন্নয়নের রাস্তায় রয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য সেক্টরের বিষয়ে তিনি বলেন, কর্মসূচী গ্রহণ, জনবল নিয়োগ ও অবকাঠামো নির্মাণের দিক দিয়ে সফলতার পথেই রয়েছে স্বাস্থ্য সেক্টর। জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সফলতা পেয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সময় স্বাস্থ্যখাতে যে সাফল্য এসেছে তা আরো ঊর্দ্ধে নিয়ে যেতে হবে। এ জন্যে আগামী দিনের কর্মসূচির সুষ্ঠু ও সফল বাস্তবায়ন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নিশ্চিত করতে হবে। একটি জনবান্ধব চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে এই খাতের কোনো অংশে অনিয়ম ও গাফিলতি মেনে নেয়া যাবে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে হলে সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদেরকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আরো যত্ববান হতে হবে। তৃণমূল মানুষের বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপগুলোর সফল বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদেরকে তৎপর থাকতে হবে। স্বাস্থ্য সেক্টরের চলমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও তার অধিনস্থ সকল প্রতিষ্ঠান আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে । স্বাস্থ্য সেক্টরের এই সব ত্যাগী ও দক্ষ জনবলের পরিশ্রমের কথা জানাতে হবে। সকালের অর্জন বিকালেই ভুলে যায় বাঙালি। তাই ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপনের মতো উদ্যোগ গ্রহণ করে বর্তমান সরকার গৃহিত উন্নয়নকর্মসূচীসমূহের বিষয়টি দেশবাসীকে জানাতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন দেশে দেড় কোটি ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করছে সরকার। বিনা টাকায় এমন চিকিৎসাসেবা বিশ্বের কোথাও নেই। চার হাজার চিকিৎসক ও দশ হাজার নার্স ইতোমধ্যে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও দশ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। তিন হাজারের বেশি নার্স নিযোগ কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ৪০ হাজার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারিও নিয়োগ দেয়া হবে। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিসেবার ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। দেশে অনুর্ধ ১২ মাস বয়সের শিশুদের সকল টিকা প্রাপ্তির হার ৮১ ভাগ। বিদ্যমান অবকাঠামোর যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মান সারাবিশ্বের অনুকরণীয় হতে পারে। পুরোদমে এগিয়ে চলছে স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম। মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট কম্পিউটার। গ্রাম এলাকার প্রতিদিনের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের সব পরিসংখ্যান তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে। অবশেষে পোলিও মুক্ত দেশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্টিফিকেট গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ । পোলিও’র পর নির্মূল হয়েছে ধনুষ্টংকার রোগ।