আন্তর্জাতিক শিশু দিবস আজ

0
67809_x3

67809_x3

ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা। ঘরে-বাইরে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তারা। হত্যা, নির্যাতন, এমনকি ধর্ষণের শিকারও হচ্ছে শিশুরা। সেইভ দ্য চিলড্রেন-এর ‘শেষ পর্যায়ের শৈশব’-এর বৈশ্বিক প্রতিবেদন ২০১৭ অনুযায়ী সহিংসতা, বাল্যবিবাহ, অপ্রাপ্ত বয়সে মা হওয়া, বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া এবং অপুষ্টি ও শিশু মৃত্যুহারের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৭২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৪।

শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করে আরেক সংগঠন শিশু অধিকার ফোরামের ২০১৬ সালের শিশু পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩ হাজার ৫ শ’ ৮৯ শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে ওই বছর। যাদের মধ্যে এক হাজার ৪শ’ ৪১ শিশু অপমৃত্যুর শিকার এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। গত বছর গড়ে মাসে ২০টির অধিক শিশু হত্যা এবং ৩০টিরও বেশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং শিশুর প্রতি রাষ্ট্র আরো দায়িত্বশীল না হলে শিশু সহিংসতা রোধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী বলেন, এদেশের শিশুরা শারীরিক এবং মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আবার শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুরাও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। রাজন, রাকিবকে নির্যাতন করে হত্যা গোটা দেশে আলোড়ন তুলেছে। কিন্তু এসব হত্যাকারীর শাস্তি এখনো কার্যকর হয়নি। শিশু নির্যাতনের শাস্তি দ্রুত কার্যকর করতে পারলে নির্যাতন কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি। শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী বলেন, শিশু মৃত্যুহার, অপুষ্টি এসব বিষয়ে বাংলাদেশ উন্নতি করলেও শিশুর সুরক্ষা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি।

শিশুরা অনেক ক্ষেত্রে পরিবারেও নিরাপদ নয়। দেখা যাচ্ছে মা শিশুকে মেরে ফেলছে। আবার নিকট আত্মীয় দ্বারাও শিশু হত্যার প্রবণতা বেড়েছে। শিশু যৌন নির্যাতনের সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। এতে করে আমরা শিশুদের নিরাপদ পরিবেশ দিতে পারছি না। এর কারণ হচ্ছে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। কারণ একটি মেয়ে শিশুকে আমরা শিশু হিসেবে দেখছি না। দেখছি মেয়ে হিসেবে। একারণে শিশু ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। আবার শিশু নির্যাতনের শাস্তি যথাযথভাবে না হওয়ায় শিশু নির্যাতন কমছে না। একজন শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হলেও সে বিচার পায় না। দেখা যায় যে, গৃহকর্ত্রী টাকার বিনিময়ে বিষয়টি আপোষ করে ফেলে। তাই শিশুদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন শিশু অধিকার আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন বলে মনে করেন এমরানুল হক চৌধুরী।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *