কর্মকর্তারা গরিব মানুষকে আঘাত বা লাঞ্ছিত করে কি আশায়

0
received_214920349775105

নজরুল ইসলাম তোফা:: ফেসবুকে ইউটিউবে এবং বহু গণমাধ্যমের বেশ কিছু জায়গায়তেই দুঃখ জনক হলেও সত্য অসহায় মানুষকে আঘাত বা লাঞ্ছিত করার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। সেখানে মুলত বর্তমানে, করোনা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে এই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ দেশের খেটে খাওয়া খুব সাধারণ মানুষকে ‘মারছে এবং শাস্তি’ দিচ্ছে। অবশ্যই তার পেছনে যথাযথ কোনো কারণ থাকতে পারে। আবার এটাও চিন্তা করার বিষয় কি কারণে তাঁরা শাস্তি পাচ্ছে। আমাদের ভাবনার গভীরতা অবশ্যই বাড়াতে হবে। তবে আমাদের সচেতন থাকাটা অনেক জরুরী এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সময়। অপরদিকে এও লক্ষ্য করার মতো কিছু মানুষ না জেনে না বুঝে সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই বিরূপ মন্তব্য পোষণ করছেন। কোনো কথা কিংবা বিষয় পেলেই তার পেছনেই যেন কিছু মানুষ উঠে পড়ে যা ইচ্ছা তাই বলতে হবে। সেটাও হয়তো আমাদের করা উচিত হবেনা বলেই মনে করি। যেকোনো কথা অবাস্তবভাবে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। তবুও একটি কথা বলতে ইচ্ছা করে, সরকারি কর্মকর্তাদের চিন্তা ভাবনা করেই মানুষদের বুঝিয়ে ঘরে পাঠানো প্রয়োজন। তাদের ভালোর জন্যে অন্য মানুষের ভালোর জন্যে এবং এইদেশ থেকে করোনা ভাইরাস দূর করার জন্যেই।

এই দেশের হতদরিদ্র মানুষরা খাওয়ার চিন্তা করা ছাড়া অন্যকিছু বুঝে না, ভাবেও না। তাদেরকে বুঝাতেই হবে, তাদেরকে অনেক ‘আঘাত কিংবা লাঞ্ছিত’ করা মোটেও উচিত হবে না। এও দেখা যায়, তাঁরা গুনী জনদের কথা বুঝে বা মূল্যায়ন করেন। কোথায় যেন সেই কিছুসংখ্যক কর্মকর্তাদের গড়মিল রয়েছে। অবশ্য এমন ঘটনা শুধুই আজকের দিনে হচ্ছে তা নয়। এইসব কর্মকর্তারাই যেন প্রতিনিয়তই অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। জানিওনা কিছু কি পাওয়ার আশায় তাঁরা এই কাজ গুলো করেন। বেশকিছু দিন ধরেই যেন সব মানুষের আলোচনায় উঠে এসেছে একজন সাংবাদিকে আঘাত করেছে। এমনতো হওয়ার কথা নয়, কেনোইবা এমন হবেন তাঁরা, সেই সব কর্মকর্তার কি জ্ঞানের অভাব রয়েছে।

একথা কথাগুলো শুধুই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময়েই প্রয়োজ্য নয়, সব সময়ের জন্যেই প্রয়োজ্য বলে মনে করি। জাতির অনেক দুঃখ হয়, শিক্ষার উদ্দেশ্য কি গরিবদের আঘাত করা। রিকশা, ভ্যান, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটর সাইকেল বা সাইকেল গুলোকেই থামানো হচ্ছে আর শুধু গরীব অসহায় মানুষ গুলোকেই মারধর বা কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে। অপর দিকে কিন্তু যারা প্রাইভেট কার, পাজেরো, মার্সিডিজ নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছে তাদেরকে কান ধরাবে বা কিছু বলে সতর্ক তো দূরে থাক গাড়িগুলোকে থামানোও হচ্ছে না। এমন নিয়ম বা আইন কি শুধু গরীবের জন্য?

কেনোই বা ফিজিক্যাল টর্চার শুধু গরিবদের করা হবে। মেন্টাল টর্চার ফিজিক্যাল টর্চারের চেয়ে ভয়াবহ হয়, তা জানতে হবে আর বুঝেই তাদেরকে প্রয়োগ ঘটাতে হবে। ফিজিক্যাল টর্চারে আপনার হাঁড় ভাঙতেই পারে। কিন্তু- মেন্টাল টর্চারে মানুষের আত্মা মৃত্যুর দিকে যায় কিংবা সচেতন করেও তুলতে পারে। আসলে বলছি না মেন্টাল টর্চার তাদেরকে করতেই হবে। এমানুষদের ভালো ভাবে বুঝনোটাই উত্তম। ভালো খারাপ যাচাই করতে পারবেন না কেন? খুব বড় বড় দায়িত্ব নিয়েই রোবোটের মত হয়ে যাবেন কেন? ফিজিক্যাল টর্চার করে কাউকে আজীবন শাসন করা যায়না। আর যদিও কোনো অমানুষ থেকেই থাকে তাদেরকে সু-কৌশলে মেন্টাল টর্চার করে, খারাপ আত্মাকে ধ্বংস করে, শুদ্ধ আত্মাকে সৃষ্টি করে সেই সব অ-মানুষকে দিয়ে সকল কাজ করিয়ে নেয়া যায় কিংবা সঠিক পথে পরিচালিত করা যায়। সুতরাং বাংলাদেশের স্বার্থে, সব মানুষের স্বার্থে, সরকারের নির্দেশ মোতাবেক বড় বড় সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাদের মেধা খাটিয়ে সব সময়েই মানুষের জন্য ভালো কাজ করা প্রয়োজন।

লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *