গুলশানের কালাচাঁদপুরে নানি-খালার ‘খুনি’ সঞ্জিবসহ গ্রেফতার ৪

0
Garo

Garo

রাজধানীর গুলশানের কালাচাঁদপুরের গারো সম্প্রদায়ের ম-মেয়ে বেসথ চিরান ও সুজাত চিরান হত্যার ঘটনায় বেসথের অপর মেয়ে নির্জলা চিরানের ছেলে সঞ্জিব চিরানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শেরপুরের নলিতাবাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে বলে এক খুদে বার্তায় জানানো হয়েছে।

চাঞ্চল্যকর এ জোড়া খুনের ঘটনা তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঞ্জিব চিরান তার তিন বন্ধুর সহায়তায় নানি ও খালাকে হত্যা করেছে বলে তারা নিশ্চিত হয়েছে। টাকা চেয়ে না পেয়ে কিংবা আগের পারিবারিক কোনো ক্ষোভ থেকে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।

তথ্য-প্রযুক্তি ও ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে গুলশান থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সুজাতের স্বামী আশিস মানকিন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। বুধবার সকালে অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে মামলা হয়।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তথ্য-প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ধস্তাধস্তির চিহ্ন পাওয়া গেছে। একাধিক ব্যক্তি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে আমরা ধারণা করছি।

তিনি আরও বলেন, বাড়ির নিচতলায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বিকাল ৪টার দিকে সুজাতের বোনের ছেলে সঞ্জিবসহ চারজন বাসায় এসেছিলেন। প্রায় ২ ঘণ্টা পর তারা বেরিয়ে যান। পরে সুজাতের বড় মেয়ে মায়াবীর স্বামী প্লেস্টার চিরান সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই বাসায় আসেন। তিনি দরজা বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। খুলে ভেতরে ঢুকে তিনি সুজাত ও তার মা বেসথ চিরানের মরদেহ দেখতে পান। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানালে তিনি ফোন দিয়ে আমাদের জানান।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক পদস্থ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সঞ্জিব নেশাগ্রস্ত ছিল। কোনো কিছুর জন্য ওই বাসায় গিয়ে সেটা না পেয়ে নানি-খালাকে হত্যা করেছে।

বুধবার সরেজমিন গুলশানের ৫৮/২ কালাচাঁদপুরের ৬ তলা বাসার দারোয়ান আবদুল আজিজ জানান, চার মাস ধরে ওই পরিবার চার তলার দুটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তারা এ এলাকায় প্রায় দু’বছর ধরে থাকেন। বেসথ চেরানের স্বামী নেই। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। অপর মেয়ে নির্জলার ছেলে সঞ্জিব।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুজাতার মেয়ে মায়াবী চিরান যুগান্তরকে বলেন, সঞ্জিব তিন বন্ধুকে নিয়ে বাসায় গিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ঘটনার পর থেকে তার ফোন বন্ধ। সঞ্জিবের স্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, সঞ্জিব পরশু (সোমবার) শেরপুর থেকে ঢাকায় এসেছে। সে এক বন্ধুর নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তার স্ত্রীকে মিথ্যা বলেছে, এক বন্ধুর সঙ্গে শেরপুরে আছে।

সুজাতার ৩ মেয়ে মায়াবী চিরান, মাধবী চিরান ও সুরভী চিরান কালাচাঁদপুরের বউ বাজার এলাকায় কসমেটিকস ও কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করে। এরা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের খবর পায়। রাত ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান গুলশান থানার এসআই মোশাররফ হোসেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুজাতের গলাকাটা মরদেহ ঘরের একটি খাটের ওপর থেকে এবং তার মা বেসথের মরদেহ পাশের শোয়ার ঘরের খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *