জি-২০ সম্মেলনের বিরুদ্ধে হামবুর্গে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ

জি-২০ সম্মেলন শুরুর আগমুহূর্তে গতকাল শুক্রবার রণক্ষেত্রে পরিণত হলো জার্মানির হামবুর্গ শহর। সম্মেলনে যোগ দিতে শহরটিতে যখন বিশ্বনেতারা জড়ো হচ্ছিলেন, ঠিক তখন সম্মেলন ঠেকাতে বিক্ষোভ শুরু করে হাজার হাজার মানুষ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের ৭৫ জন আহত হয়েছেন। এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে ২০ হাজার পুলিশ হামবুর্গে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। বিক্ষোভকারীদের সম্মেলনস্থলে যাওয়া ঠেকাতে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসি, সিএনএন ও এএফপির।
হামবুর্গে গতকাল শুরু হয়েছে দু’দিনের জি-২০ সম্মেলন। এতে বিশ্বনেতারা জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন স্বাগতিক জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ বিশ্বনেতারা। তবে সম্মেলন শুরুর আগমুহূর্তে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ‘নরকে স্বাগত’ লেখা ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয় প্রায় ১২ হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীরা এ সময় মুখোশ পরে বিক্ষোভ করছিল। পুলিশ এতে বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিক্ষোভরত মানুষকে লক্ষ্য করে পুলিশ জলকামান, মরিচের পানি ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরা পাল্টা বোতল, পাথর ও জ্বলন্ত মশাল ছোড়ে।
পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্থানে ব্যরিকেড দেয় এবং যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া পুলিশের হেলিকপ্টারের পাইলটকে বিভ্রান্ত করতে বিক্ষোভকারীরা ধারাবাহিকভাবে লেজার রশ্মি ছুড়ে মারে। তাদের থামাতে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
প্রথম দফায় সংঘর্ষের পর বিক্ষোভকারীরা মিছিল বন্ধ করে রাস্তায় অবস্থান নেয়। পুলিশ জানায়, সম্মেলনস্থলের আশপাশের এলাকায়ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের পর শহরের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যকর্মীদের চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, বৈষম্য দূর করতে সরকারপ্রধানরা যেন আরও মনোযোগী হন তা মনে করিয়ে দেওয়াই বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য। এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমি জি-২০ সম্মেলনের বিরোধী; কারণ তারা গণতান্ত্রিক নয়। তারা অন্য দেশগুলোর জন্য নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে চায়, যা একেবারেই সমীচীন নয়। আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, আমি এদের বিরোধিতা করি; কারণ তারা যে রাজনীতি করে তা আমি পছন্দ করি না। যেমন এরদোয়ান, পুতিন ও ট্রাম্প।
এবারের সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ও মুক্ত বাণিজ্য নীতি নিয়ে তীব্র বাদানুবাদ হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সম্মেলনের আগে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই সম্মেলনেই পুতিনের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক ট্রাম্পের।