ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী, বিএনপি প্রার্থী বদলের সম্ভবনা

0
nanak

nanak

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে বর্তমান সংসদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন আরেক নেতা হাজী মকবুল হোসেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় আরো রয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানও। প্রত্যেকেরই দাবি, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো। তাই তারা আশা করছেন দলের মনোনয়ন নিজের পক্ষে আসবে।

এদিকে বিগত নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর যোগ্যতা ও দুর্বলতাকে বিবেচনা করে এবার বিএনপির প্রার্থী বদল হতে পারে। দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল স্থানীয় বাসিন্দা না হওয়ার কারণে এ আসনে পরিবর্তন আসতে পারে। এক্ষেত্রে বিএনপি চেয়াপার্সনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবদুস সালাম এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন। এই মনোনয়ন দৌড়ে কে জিতবেন তা নিয়ে এখনই শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে এলাকাভিত্তিক গণসংযোগ এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।

উল্লেখ্য, ঢাকা-১৩ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওযার্ড নিয়ে গঠিত। মনোনয়ন প্রসঙ্গে এই নির্বাচনী এলাকা এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা এবার বেশি। মোহাম্মদপুর এলাকার আওয়ামী লীগের একজন কর্মী বলেন, ‘টানা দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকায় এলাকার জনগণের সঙ্গে নানকের একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া বিগত দিনে বিএনপির নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন প্রতিরোধ, জঙ্গি প্রতিরোধ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। আগামী নির্বাচনে তার মনোনয়ন নিয়ে আমরা আশাবাদী।’ আবার কেউ কেউ বলছেন, এই আসনে এবার প্রার্থী হতে পারেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান। মোহাম্মদপুর এলাকায় তাদের পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান বেশ শক্ত।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, ‘এ আসন থেকে আমার নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে। এলাকার সাধারণ মানুষও আমার সাথে রয়েছে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে নেত্রীর উপর। নেত্রী মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করব।’

ঢাকা-১৩ আসন পুনর্বিন্যাসের আগে ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুরের সংসদ সদস্য ছিলেন হাজী মকবুল হোসেন। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আসন পুনর্বিন্যাস হলে ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর দুটি আলাদা আসন হয়। এখন মোহাম্মদপুর আসনটি ঢাকা-১৩ তে পড়েছে। মকবুল সমর্থকরা চান এই আসন থেকে তিনি নির্বাচন করুক।

হাজী মকবুল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। সংগঠন গোছাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ফলে দলের মধ্যে শক্ত একটি অবস্থান রয়েছে তার। এছাড়া এলাকার জনগণের সাথেও তার সুসম্পর্ক রয়েছে। শিক্ষানুরাগী হিসেবে এলাকায় তার সুনাম রয়েছে।

মনোনয়ন প্রসঙ্গে হাজী মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে সবসময় তাদের পাশে আছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে আমি বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘গত দুই সংসদ নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চাইনি। এবার নেত্রী চাইলে আমি নির্বাচন করব। মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকার বাসিন্দাদের সেবা করতে চাই।’

এদিকে এই আসনে ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছেন বিএনপির বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এ আসনে ইতিমধ্যে প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দলের মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি আতিকুল ইসলাম মতিন ও সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান। দলের সবুজ সঙ্কেত পেতে আরো বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে জেনেও তারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে বিএনপি এবার অনেক হিসেব কষে এ আসনে তাদের প্রার্থী নির্বাচন করবে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ম্যাডাম আমাকে বলে দিয়েছেন এই আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে। আমি সেভাবেই আগাচ্ছি। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে অবশ্যই আমি জয়ী হবো।’

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *