ঢাবি সিনেট নির্বাচন : সাংবাদিকের শাস্তি চেয়ে আবেদনের নিন্দা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শাসকদল সমর্থিত নীল দলের বিভক্তি নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় দৈনিক যুগান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান নয়নের শাস্তি চেয়ে এক শিক্ষকের উপাচার্য বরাবর আবেদনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কয়েকটি সংগঠন।
সংগঠনগুলো ওই শিক্ষকের এমন আচরণকে অবৈধ ও গণমাধ্যমের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করে।
বিবৃতি দেয়া সংগঠনগুলো হলো- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, শাহ জালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।
এ ঘটনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত গণমাধ্যমের কর্মীদের সংবাদ প্রকাশে নিরাপদ পরিবেশের বিপরীত বলে মনে করে সংগঠনগুলো। সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জি এম জিলানী শুভ এবং সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বিবৃতিতে জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মধ্যে যে ধরনের রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই চর্চাকে কেন্দ্র করে কোনো গণমাধ্যম কর্মীকে যেন হয়রানি না করা হয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন যৌথ বিবৃতিতে জানান, এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতির ধারাবাহিকতা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আদর্শিক ধারণা থেকে সরে না আসে সেই আহ্বান জানাই।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বিবৃতিতে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের শিক্ষকদের সাধারণ সভায় বিশৃঙ্খলা বা হট্টগোলের বিষয়টি কোনো গোপন বিষয় ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকসহ অনেকেই তা প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু এই সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অধ্যাপক ড. বায়তুল্লাহ কাদেরী কর্তৃক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্যকে দেয়া অভিযোগ পত্র প্রদানের ঘটনাটি বিস্ময়কর।
শাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ ইকবাল ও সাধারণ সম্পাদক সরদার আব্বাস আলী যৌথ বিবৃতিতে জানান, ‘হট্টগোল ও ওয়াকআউটে পণ্ড নীল দলের সভা’ শীর্ষক দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদটি ছিল যথেষ্ট তথ্যসমৃদ্ধ ও বস্তুনিষ্ঠ। কিন্তু প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ কিংবা সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে কোনো বিবৃতি না দিয়ে গোপনে একজন সাংবাদিকের বিচার চাওয়ার ঘটনা নজীরবিহীন।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মে দৈনিক যুগান্তরে ‘হট্টগোল ও ওয়াকআউটে পণ্ড নীল দলের সভা’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদের আংশিকের বিরোধিতা করে বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. বায়তুল্লাহ কাদেরী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট ওই প্রতিবেদকের শাস্তি চেয়ে আবেদন করেন। যদিও তিনি দৈনিক যুগান্তরকে সংবাদের কোনো অংশের বিরোধিতা করে চ্যালেঞ্জ করেননি।