দিল্লিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮, জাতিসংঘের উদ্বেগ

0
FB_IMG_1582828660972

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুসলমানদের ওপর চালানোসহিংসতায় লাশের মিছিল বড় হচ্ছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গাকবলিত এলাকা থেকে একের পর এক লাশ বেরিয়ে আসছে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চার দিনে ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দিল্লির এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

বিবিসির খবরে বলা হয়, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উত্তর-পূর্ব দিল্লির ভজনপুরা, মৌজপুর, কারাওয়ালনগর, মুস্তাফাবাদসহ কয়েকটি এলাকা বিধ্বস্ত জনপদে পরিণত হয়েছে। মুস্তাফাবাদে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) বিরোধীদের ওপর এসিড হামলা করা হয়েছে। এতে চারজন দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফর চলাকালে দিল্লিতে সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে তা হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় রূপ নেয়। বুধবার রাতে মুসলিম অধ্যুষিত উত্তর-পূর্ব দিল্লির ভজনপুরা, মৌজপুর ও কারাওয়ালনগরে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার গগন বিহার-জোহরিপুর এলাকার একটি ড্রেন থেকে দুটি লাশ পাওয়া যায়। পেট্রলবোমা ছোড়া, গাড়ি জ্বালিয়ে তাণ্ডবের পাশাপাশি এবার এসিড হামলার পথে নেমেছে বিক্ষোভকারীরা। মুস্তাফাবাদের অনেক জায়গায় এসিড হামলার খবর পাওয়া গেছে। এসিডে অনেকের চোখ-মুখ, গোটা শরীর ঝলসে দেয়া হয়েছে।

দিল্লির তেগবাহাদুর হাসপাতালে এসিড ক্ষত নিয়ে ভর্তি অনেকে। এসিড হামলায় চারজন হারিয়েছেন দৃষ্টশক্তি। জ্বালাপোড়া ক্ষত নিয়ে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। খুরশিদ নামে একজনের দুই চোখই নষ্ট হয়েছে। দুই চোখসহ পুরো মুখ ঝলসে গেছে ওয়াকিলের। জাফরাবাদ-মৌজপুরে এখন শ্মশানের নীরবতা বিরাজ করছে।

মুস্তাফাবাদের গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া এলএনজেপি হাসপাতালে দুইজন এবং জগ পরবেশ চন্দ্র হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

মৌজপুরের দোকানের মালিক কোন ধর্মের তা দেখেই আগুন লাগানো হয়েছে। এ পাড়ায় ধর্মের জোরে যাদের দোকান বেঁচেছে, অন্যগলিতে সেই ধর্মের জেরেই দোকান পুড়েছে। জাফরাবাদের এক বাসিন্দা বলেন, ‘ভেতরের মহল্লায় অশান্তি চলছে। কোথায় কতজনের দেহ পড়ে রয়েছে কেউ জানে না। পুলিশ এখনও ঢুকতে পারেনি ভেতরে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস নিবিড়ভাবে দিল্লি পরিস্থিতি নজরে রেখেছেন। বিক্ষোভকারীদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে দেয়া এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সংযত থাকা উচিত- এ বিষয়টির ওপরই গুতেরেস জোর দিচ্ছেন।

সেইসঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব শান্ত পরিবেশ এবং স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা জরুরি বলেও গুতেরেস মত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *