দ্রুতগতির যানের চাপে পোস্তগোলা ব্রিজে বাড়ছে ফাটল ও মৃত্যু ঝুকি

0
news_234193_1 (1)

এ.এইচ.এম.শাহ্জাহান: পোস্তগোলা ব্রিজ নামে পরিচিত ১ম বুড়িগঙ্গা সেতুর ফাটল বাড়ছে। রাতে দ্রুতগতির যান চলাচল করায় ফাটলের পরিধি ও মৃত্যুর ঝুকি বেড়েই চলেছে। ফাটল ধরার এক সপ্তাহ অতিক্রম হলেও এখনো শুরু হয়নি সংস্কারকাজ। এ কারণে নিয়মিত যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অনেকটা আতঙ্কে ব্রিজ পার হচ্ছে মানুষ।
এদিকে, ব্রিজ সংস্কারকাজ শুরু করতে আরো দুদিন সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ দুদিন পর্যবেক্ষণ করে সেতু সংস্কারের পদ্ধতিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তাঁরা।
উল্লেখ্য ২৯ জুন ‘ময়ূর-২’ নামে একটি লঞ্চের ধাক্কায় ‘মর্নিং বার্ড’ নামে অন্য একটি লঞ্চ বুড়িগঙ্গায় ডুবে যায়। নিমজ্জিত লঞ্চটি উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসার পথে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’-এর ক্রেনের ধাক্কায় পোস্তগোলা সেতুর পূর্বপাশের দুটি গার্ডারে ফাটল দেখা দেয়। প্রথমে ঘটনা সামান্য মনে হলেও পরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানায়, ফাটল গুরুতর। এ জন্য সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তবে জনদুর্ভোগ এড়াতে ২৬ ঘণ্টা পর গত ৩০জুন রাতে যাত্রীবাহী পরিবহনের জন্য সেতুটি সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়।
এ ফাটলের কারণে সেতু দিয়ে কোনো যান চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, শুভাঢ্যা ও হাসনাবাদের জনসাধারণ। বর্তমানে ওই সেতু দিয়ে শুধু হালকা যান চলাচল করছে। ভারী যান চলাচল করতে না পারায় বুড়িগঙ্গার দক্ষিণাংশের শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা কয়েক দফা সেতু পরিদর্শন করলেও সংস্কারের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে পারেননি। গতকাল ৩ জুলাই একটি বিশেষজ্ঞদল ক্ষতিগ্রস্ত সেতু পরিদর্শন করেছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, আগের চেয়ে সেতুতে ফাটলের আকার বেড়েছে। দ্রুতগতিতে যানবাহন চলায় কম্পন থেকে ফাটল বেড়েছে বলে তাঁদের ধারণা।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, চার লেনের সেতুটির দুই মাথায় সব লেন উন্মুক্ত থাকলেও ফাটল বরাবর জায়গায় দুই লেন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ব্যারিকেড দিয়ে সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা অঞ্চল) সবুজ উদ্দিন খান দিনবদল নি্উজকে বলেন, ‘রাতে সেতুর ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলার কারণে ফাটল বেড়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, গাড়ির ভাইব্রেশন থেকে ফাটল বেড়েছে। গতি নিয়ন্ত্রণ করে আমরা দু-একদিন পর্যবেক্ষণ করব। আর এ সময়ের মধ্যে ফাটল সংস্কারের ধরন ঠিক করা হবে।’
সওজের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘সংস্কারের পদ্ধতি নির্ধারণে বিশেষজ্ঞদল কাজ করছে। সেতু সংস্কারে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। সংস্কারকালে যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে কি না, পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেতুর কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণে ‘আলট্রাসাউন্ড’ ও ‘এক্স-রে’সহ কয়েকটি পরীক্ষা করা দরকার।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *