নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের বিস্ফোরণের আটক আকায়েদ উল্লাহ জন্মসূত্রে বাংলাদেশি

0
Ullah-

Ullah-

নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি বাস টার্মিনালে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক আকায়েদ উল্লাহ জন্মসূত্রে বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিউ ইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার জেমস ও’নেইল বরাতে সিবিএস নিউজ জানায়, ২৭ বছর বয়সী আকায়েদের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা-মায়ের সঙ্গে সে যুক্তরাষ্ট্রে আসে। পরে আকায়েদ স্থায়ী মার্কিন অধিবাসী হিসেবে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে বসবাস করতে শুরু করে।

এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানানো হয়, এ বছরের ৮ সেপ্টেম্বর আকায়েদ শেষ বারের মতো বাংলাদেশে এসেছিল। তার নামে বাংলাদেশে কোনও অপরাধমূল কর্মকাণ্ডের রেকর্ড নেই।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের দাবি, আটক আকায়েদ জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত। কিন্তু তার সঙ্গে আইএস-এর সরাসরি কোনও যোগাযোগ ছিল না।

নিউ ইয়র্ক সিটি ট্যাক্সি এবং লিমোজিন কমিশন জানিয়েছে, ‘ ২০১১ সালে নিউইয়র্কে আসেন তিনি।পরে থাকতে শুরু করেন ব্রুকলিনে। এ এলাকায় ট্যাক্সিচালক হিসেবে কাজ করতেন। ২০১২ মার্চ থেকে ২০১৫ মার্চ পর্যন্ত তার নামে ট্যাক্সির লাইসেন্স ছিল।’

নিউইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি বৈদ্যুতিক কোম্পানিতে কাজ করছিলেন আকায়েদ। সেখানে তার ভাইও কাজ করতেন।

নিউইয়র্কের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, কর্মস্থলেই বিস্ফোরকটি তৈরি করেছিলেন আকায়েদ উল্লাহ। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে সেটি বিস্ফোরণ হয়নি।

আকায়েদ ও তার পরিবার যে বাড়িতে থাকেন, ঠিক তার পাশেই থাকেন অ্যালান বুতরিকো। সিএনএনকে তিনি জানিয়েছেন, আকায়েদ থাকতেন ভূগর্ভস্থ কক্ষে। তার বোন থাকতেন দোতলায়। তার ভাইও থাকতেন একই ভবনে। বুতরিকো বলেন, দুই রাত ধরে আকায়েদের বাড়িতে মারামারি, চিৎকার ও কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল।

বুতরিকো বলেন, ‘আমার ভাড়াটেরা জানিয়েছেন, দুই রাত ধরেই এমন চলেছে। তারা কান্না ও গোঙানোর শব্দ শুনতে পেয়েছেন। তবে কী হয়েছে বুঝতে পারেননি। পুলিশেও খবর দেওয়া হয়নি।’

অ্যালান আরও জানান, বন্ধুসুলভ ছিলেন না আকায়েদ। তিনি বলেন, ‘সে একেবারেই বন্ধুসুলভ ছিল না। তার পরিবার অর্ন্তমুখী স্বভাবের। কারও সঙ্গেই খুব একটা কথা বলত না। তারা কেবল এখানে থাকত, ব্যস এটুকুই।’

অন্যদিকে, জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে আকায়েদের সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। কিছু সংবাদমাধ্যম এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন বলেছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

গুরুতর আহত আকায়েদ উল্লাহকে এখন বেলেভু হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিস্ফোরণে তার হাত ও পেটের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণে আরও চার ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।

চলতি বছরে নিউইয়র্কে এটি তৃতীয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা। গত মার্চে মার্কিন সেনাবাহিনীর এক সাবেক সদস্য ছুরিকাঘাতে এক কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করেন। এ ছাড়া গত অক্টোবরে এক উজবেক বংশোদ্ভূত অভিবাসী পথচারীদের ওপর ট্রাক চালিয়ে দিলে আটজনের মৃত্যু হয়। ওই দুই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখন বিচার চলছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *