নিউমার্কেটে হয়রানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এক নারীর গল্প

0
3333333333

3333333333

ভাইয়ের বিয়ের কেনাকাটা করতে ঢাকার নিউমার্কেটের নুরজাহান মার্কেটে গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসমিন ওয়াজিদা। সঙ্গে তার মা ছিলেন।

একটি দোকানে তাদের কাঁচের চুড়ি পছন্দ হয়। দোকানদারকে দূর থেকে চুড়িগুলো দেখিয়ে তারা দাম জানতে চান। দোকানদার অনেক বেশি দাম বললে, তারা বলেন, ঠিক আছে, আমরা একটু পাশের দোকান দেখে আসি যে, অন্য কোন ডিজাইন আর আছে কিনা?

তাসমিন ওয়াজিদা বলছেন, ”তখন দোকানদাররা আমাদের রাস্তা আটকে দিয়ে বকাবকি করতে থাকে। তারা বলে, কি ফকিরনি কোথাকার, মার্কেটে কি করতে আসছেন। শুধু চেহারা দেখাতে আসছেন নাকি।”

”আমরা অনেক অবাক হয়ে যাই।
কারণ আমরা তাদের জিনিসের দরদাম তো করিই নাই, ধরেও দেখি নাই। শুধু দূরে থেকে দেখিয়ে দাম জিজ্ঞেস করেছি। আমি যখন বলি, ভাইয়া আপনি এমন কথা বলছেন কেন, আমার আম্মু স্কুল টিচার, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট। তখন তারা আমার মাকে নিয়ে, আমার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও অনেক বাজে বাজে কথা বলতে থাকে।”

”সব থেকে দুঃখজনক ব্যাপার, আশেপাশে অনেক মানুষ জমে গিয়েছিল, কিন্তু কেউ আমাদের সমর্থন করেনি। বরং অনেকে বলছিল, মেয়ে মানুষ, এত কথা বলেন কেন? বলছে, আপনারা মাথা নিচু করে চলে যাবেন।”
বাংলাদেশে অন্তত ৫০ শতাংশ নারী কেনাকাটা করতে গিয়ে অপ্রীতিকর স্পর্শের শিকার হয় এবং অন্তত ৪২ শতাংশের বেশি নারী হাসপাতালে সেবা নিতে গিয়ে রূঢ় আচরণের শিকার হয় বলে একটি গবেষণা শেষে জানাচ্ছে বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড।

এসব রোধে একটি নীতিমালা তৈরিরও তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ নারীই এসব ঘটনায় মুখ বুজে চলে যান।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসমিন ওয়াজিদার সঙ্গে, যিনি ঢাকার এরকম ঘটনার শিকার হওয়ার পর রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ২০১৬ সালে এই ঘটনাটি ঘটে।

তিনি বলছেন, সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করা উচিত। প্রতিবাদ করলে, পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে এর প্রতিকার পাওয়া যায়।

নিউমার্কেটের ওই ঘটনার পর তিনি পুরো বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। সেই স্ট্যাটাস দেখে আবদুল্লাহ আল ইমরান নামের একজন অ্যাক্টিভিস্ট তাকে নিউমার্কেট থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন।

সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুন নাহার পুরো ঘটনাটি শুনে তৎক্ষণাৎ তার সঙ্গে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে ওই দোকানদারদের ধরে নিয়ে আসেন।

এরপর ওই দোকানদার এবং আশেপাশে যারা তাকে সমর্থন করেছিল, তারাও বুঝতে পেরেছে যে তাদের ভুল হয়েছে।

মিজ ওয়াজিদা বলছেন, পরবর্তীতে আমি আবার ওই দোকানে আবার গিয়েছিলাম। দেখলাম যে, তার আচরণের মধ্যে বেশ পরিবর্তন এসেছে।

বিবিসি বাংলা

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *