নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আন্দোলনে উত্তাল জাবি

0

received_414261756168670

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবি ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা মিছিল করেন। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে বের হয়ে পুরনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে রাত ৮টায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ভিসির অপসারণ ও হামলার প্রতিবাদে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা । এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা জানান।

এদিন বেলা ১১ টায় ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। এতে বিভিন্ন বিভাগের ২৫-৩০ জন শিক্ষক সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের আন্দোলনকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাবো।

তিনি বলেন, গতকাল দুপুরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে এবং চলমান আন্দোলন দমাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল খালির ঘোষণাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। একই সঙ্গে আবারও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করব।

সমাবেশ সংহতি জানিয়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাঁচানো যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের চিন্তা বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিকাশিত হতে দিন।

তিনি উপাচার্যকে অনুরোধ করে বলেন, যেটুকু সম্মান আছে তা নিয়ে দয়া করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেন।

এদিকে দুপুর ১২টায় এক জরুরি মিটিং ডেকে বিকাল সাড়ে ৩ টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিবাদে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা ফলে ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি। ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণার পরও উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

হল ত্যাগের বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, এই সময়ের পর আন্দোলনকারী, সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ কেউই হলে থাকতে পারবে না। প্রয়োজন হলে প্রশাসন আবাসিক হলে পুলিশ তল্লাশি চালাবে।

তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ‘হল ভ্যাকেন্ট’ এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা বলছেন উপাচার্যের অপসারাণ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

এদিকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে শতাধিক পুলিশ।

এছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ভিসির বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা।

উপাচার্যের বাসার সামনে দায়িত্বরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী তিনশ’ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাম্পাসে দেড়শ’ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আর বাইরে রিজার্ভ রয়েছে আরো দেড়শ’।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *