পথশিশুদের ঈদ আনন্দে ছিল বিভিন্ন সংগঠন

0
3

1

টিএসসি সহ রাজধানীজুড়ে সারাবছর যে শিশুরা পথে পথে থাকে, সিগন্যালে ‘কিছু লাগবনি স্যার’ বলেই কিছু না কিছু নিয়ে হাত বাড়িয়ে দাঁড়ায় আপনার সামনে। আজ তারাও ঈদের দিনটি পালন করেছেন নিজেদের সাধ্যমতো, আনন্দে। তাদের এই আয়োজনকে আরেকটু রাঙিয়ে দিতে মাসজুড়ে কাজ করেছেন অনেকেই। আর যাদের পরিবারে কেউ নেই বা বাবা-মায়ের কাজ আছে ঢাকায় তারা বাদে রোজার একমাস ক্লান্তিহীন কাজ করে সেসব পথশিশুরা অনেকেই ঢাকা ছেড়েছে।

পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করে যেসব সংগঠন তার মধ্যে জসিম ফাউন্ডেশন একটি সংগঠন, জসিম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস এম জসীম বলেন, ‘আমরা ঈদের আগেই শিশুদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করি। কারণ, তাদের অনেকেই পরিবারের কাছে চলে যায় বা এ দিনটা পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চায়। তাদের হাতে ঈদের আগের দিনেই তুলে দেওয়া হয়েছে নতুন জামা, প্যান্ট, বেলুন, চকলেটসহ আরও কিছু।

পথশিশুদের ঈদ, রাজধানীতেই রয়েছে তাদেরও ঈদে নতুন জামা দেওয়া হয়েছে, শিশুরা পেয়েছে সেমাই মিষ্টি আর ফাঁকা রাজধানীতে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ।

ঈদের দিন সকালে শাহবাগে আট বছরের ফাতেমার কাছে জানতে চাইলে বলে, ‘ঈদ আবার ক্যামন, ঈদে মায়ে বকে না।’ এটাই শান্তি।

2

সকালে ফাতেমা ঘুরছিল শাহবাগে। শুধু শাহবাগে নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাতেই পথ শিশুরা ফাঁকা রাস্তায় নতুন জামা পরে ঘুরছে। রাজধানীর পরিবাগ এলাকাতেও বেশ কয়েকজন পথশিশুকে নতুন জামা পড়ে ঘুরতে দেখা গেছে। কোথা থেকে এসেছে জানতে চাইলে এসব শিশুরা বলেন, ‘আমাদের স্কুল আছে। ঈদে সেখানে আমাদের জন্য সেমাই মিষ্টি খাওয়া ছিল।

পথশিশুদের ঈদ আয়োজন মায়ের, কাঁঠালবাগান ঢাল এলাকায় নতুন জামা পরে দুপুরের খাবার জন্য মায়ের পাশে বসে বায়না করছিল সালমা। মাথায় ‍দুই ‍ঝুঁটি। সকালে একদফা ঘুরে এসেছে। বিকেলে আবারও যাবে ঘুরতে।

কোথায় ঘুরবে জানতে চাইলে সালমা বলে, ‘লেকে যাব।’ পাশ থেকে চা বিক্রেতা বাবা বলেন, ‘আমি যখন বিক্রি করতে যাব তখন সঙ্গে যাবে। এদিনটা চারপাশে সবাই আনন্দ করে। ও একটু ঘুরবে, এটাই আমাদের ঈদ।’ এরপর ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে বসে যায় সালমা।

দুপুরে কী খাবেন জানতে চাইলে সালমার মা বলেন, ‘খান আমাদের সঙ্গে। চুলায় গরম ভাত দেখিয়ে বলেন, ‘মুরগির মাংস আছে। যে বাসায় কাজ করি তাদের দেওয়া সেমাইও আছে।’

জসিম ফাউন্ডেশন ও মাস্তুল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনসহ বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতি ঈদেই সাধ্যমতো পথশিশুদের জন্য পোশাক ও খাবারের ব্যবস্থা করে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভোরবেলা যে কয়জন শিশু পাওয়া যায়, তাদের জন্য সেমাইয়ের ব্যবস্থাও করা হয়। ঈদের দিনটা একটু বিশেষ করে শিশুদের কাছে তুলে ধরতে।

3

মজার স্কুল সংগঠনটির অন্যতম সংগঠক আরিয়ান আরিফ বলেন, ‘রাজধানী ঢাকার শাহবাগ, কমলাপুর, সদরঘাটের তিনটি অস্থায়ী ইশকুলে, আগারগাও , মানিক নগর এর দু’টি স্থায়ী ইশকুল ছাড়াও খিলগাঁও, বেইলি রোড, মালিবাগ রেলগেট, উত্তরা ১২ নাম্বার সেক্টর ও ধানমণ্ডি রবীন্দ্র সরোবরসহ ১০টি পয়েন্টে আটশ’ শিশুকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ উৎসব। ছেলে শিশুর জন্য রঙ্গিন শার্ট, জিন্স প্যান্ট, বেল্ট, রঙ্গিন চশমা, রঙ্গিন হাত ঘড়ি এবং প্রত্যেক মেয়ে শিশুর জন্য রঙ্গিন ফ্রক / থ্রি পিচ, টাইটস, মেকাপ বক্স, রঙ্গিন চশমা, রঙ্গিন হাত ঘড়ি। প্রত্যেক শিশুর জন্য ছিল ঈদ সালামি হিসেবে নতুন টাকা।

এদিকে, জসিম ফাউন্ডেশন ঈদের আগে পথশিশুদের মাঝে বিনামুল্যে শরবত, ইফতার ও সাংবাদিকদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল। মাস্তুল নামের সংগঠনটি চাঁদরাতে শিশুদের নিয়ে নানা অনুষ্ঠান উদযাপনের মধ্যদিয়ে ঈদ উৎসব পালন করেছে। তারাও নানা সামগ্রী দিয়ে পথশিশুদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *