প্রশংসায় ভাসছেন কনস্টেবল পারভেজ

0
7878

din bodal 1

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ছেলে মো. পারভেজ মিয়া। বর্তমানে কুমিল্লার দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। গত শুক্রবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডোবার নোংরা পচা পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে ২৫ বাসযাত্রীর জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এ কীর্তি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিনি গণমানুষের কাছে সাহসী বীর হিসেবে পরিণত হন। তার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তাকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গণসংবর্ধনা দেবার তোড়জোড় চলছে।

7878

এদিকে ছেলের এমন বীরত্বের কাজ খুশি তার বাবা-মা। সারাজীবনে যেন পারভেজ এভাবে জনগণের সেবা করতে পারে সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা।

পারভেজ জানায়. গত শুক্রবার সকালে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এসময় ঢাকা থেকে চাঁদপুরের মতলবগামী মতলব এক্সপ্রেসের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের ডোবায় পড়ে যায়। বাসে শিশুসহ অনেক যাত্রী ছিল। উৎসুক জনতা উদ্ধার কাজে এগিয়ে না গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাসটি তলিয়ে যাবার দৃশ্য দেখছিল। তখন নিজের জীবন বাজি রেখে নোংরা পচা ডোবায় ঝাঁপিয়ে পড়েন কনস্টেবল পারভেজ। উপস্থিত বুদ্ধিতে হাতে একটি কাপড় পেঁচিয়ে বাসের জানলার কাচ ভেঙে দেন এবং দরজা খুলে দেন যাতে যাত্রীরা সহজে বের হতে পারেন। পরে নিজে এক শিশুকে উদ্ধার করেন। পরে তার ডাকে সাড়া দিয়ে সেই ভাঙা জানালা দিয়েই স্থানীয়রা প্রায় ২৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেন।

কেন জীবন বাজি রেখে এভাবে ডোবায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন এমন প্রশ্নের জবাবে পারভেজ জানান, চোখের সামনে এতোগুলো মানুষকে মরতে দেখতে পারতাম না, তাই পচা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি।

পারভেজ যা করেছে তা অসামান্য। তার কাজে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে জানিয়েন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবুল কালাম আজাদ।

এদিকে তার কাজের জন্য পারভেজকে অভিনন্দন জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দশ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার দিয়েছেন হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়ন পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ। তিনি জানান, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি তার জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে পারভেজ ঝুঁকি নিয়ে যা করেছে তা হাইওয়ে পুলিশ বিভাগের জন্য সত্যই প্রশংসনীয়। পুরস্কার দিয়ে কাজের মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। তবুও এ কাজের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি যাতে তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে পান এ ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে।

এদিকে পারভেজের সাফল্যের খবরে আনন্দের বন্যা বইছে তার গ্রামে বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি গ্রামে। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম বলেন, তার ছেলে এলাকাবাসীর কাছে তার মুখ উজ্জ্বল করেছে। আর সারাজীবন যেন পারভেজ এভাবে জনগণের সেবা করতে পারে সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার মা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *