প্রায়ই পা অবশ হলে যা করবেন

0

leg-3

পা অবশ, প্রায়ই ঝিন ঝিন- ডায়াবেটিক ফুটের সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগী ঘরে ঘরে। কীভাবে যত্ন নেবেন? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই! প্রায়ই পা অবশ হয়ে যাচ্ছে? কেটে গেলে টেরও পাচ্ছেন না? কাটা জায়গা থেকে ঘা হয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে? এমন লক্ষণ দেখা দিলে সময় থাকতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

দেরি হলে পা কিংবা পায়ের আঙুলের কোনও অংশ বাদ দিতে হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা পায়ে অস্বাভাবিক কিছু দেখলে দ্রুত চিকিৎসক দেখান।

কখন হয়-

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে অর্থাৎ এইচবি১সি-তে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৭-এর বেশি হলে সতর্ক হতে হবে। যে কোনো সময় নার্ভের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও সামান্য অসাবধানতা থেকে পায়ের নানা সমস্যা হয়।

কেমন সমস্যা-

দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভে প্রভাব ফেলে। যাকে নিউরোপ্যাথি বলা হয়। এক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই রোগীর পা ঝিন ঝিন করে। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর হাঁটতে শুরু করলে পা ঝিন ঝিন করে। কিছুক্ষণ হাঁটার পর ধীরে ধীরে ঠিক হয়। অনেক সময় আবার রোগীর পায়ে কোনো অনুভূতি থাকে না। রোগী মনে করেন যে তিনি সর্বক্ষণ বালির উপর দিয়ে হাঁটছেন। পায়ের কোনো অনুভূতি না থাকায় কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে রোগী বুঝতেও পারেন না। ঘুমের মধ্যে হাত-পা ছুড়তেও দেখা যায়। রোগীর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মতো পায়ে অনুভূতি হয়।

ডায়াবেটিসের সঙ্গে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে ও ধূমপান করলে অনেক সময় ধমনিতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। এই ধরনের ডায়াবেটিক রোগী বেশিক্ষণ হাঁটা চলা করতে পারেন না। একে ইসচেমিক পেন বলা হয়। কিছুক্ষণ হাঁটার পর রোগীর পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে ঠিক হতে পারে।

ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে সংক্রমণ হতে পারে। ইনফেকশন হয়ে অনেক সময় সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। একে ডায়াবেটিক ফুট আলসার বলে। পায়ের পাতা বা আঙুলের মাঝখানে সাদা রঙের ছত্রাকের মতো ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে অ্যামপুটেশন বা পা কেটে বাদ দেওয়া হতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীর সংক্রমিত পায়ে কিছু ফুটে গেলে বা ঢুকলে শুকোতে দেরি হয়।

ডায়াবেটিস রোগীরা কী করবেন-

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এইচবিএ১সি-তে ব্লাড সুগারের মাত্রা ৬.৫ অথবা ৭-এর নিচে থাকতে হবে।
পায়ের কোনো সমস্যা হলে নরম জুতো ব্যবহার করুন। বাড়িতেও খালি পায়ে হাঁটবেন না।

প্রত্যেকদিন পায়ের নিচে ও আঙুল আয়না দিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হবে। পা ফাটা, ফোলা, লালভাব, ইনফেকশন হয়েছে কি না তা দেখুন। কোথাও খালি পায়ে যেতে হলে রোদ ওঠার আগে যান। রোদের তাপে ডায়াবেটিক রোগীর পায়ে ফোস্কা পড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে।

পায়ে কখনোই গরম সেক দেওয়া চলবে না। আপাতদৃষ্টিতে আরাম হলেও তা ডায়াবেটিক রোগীর শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়।

ডায়াবেটিক রোগীর রোগীর পা সন্ধ্যায় ফুলে যায় তাই সন্ধ্যার পর জুতোর প্রকৃত মাপ পাওয়া গেলে জুতো কেনা উচিত৷

নিয়মিত ব্লাড সুগার মাপা ও ডাক্তারের পরামর্শ মাফিক লাইফস্টাইল মেনে চলুন। হাঁটাচলা করুন, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন।

চিকিৎসা-

নার্ভের কোনো সমস্যা বা নিউরোপ্যাথি হলে সঠিক সময়ে চিকিৎসকরে পরামর্শ নিন। নার্ভের অসুখে নার্ভ কনডাকশন ভেলোসিটি টেস্ট করা হয়। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী নার্ভের চিকিৎসা করা হয়। রোগীকে ব্যথার ওষুধ গাবাপেনটিন (Gabapentin) প্রিগাবালিন (Pregabalin) ইত্যাদি দেওয়া হয়।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *