বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স বাড়ছে

0
15245

15245

দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ তৃতীয়, বিশ্বে নবম *প্রথম স্থানে ভারত (৬৯ বিলিয়ন ডলার) *দ্বিতীয় চীন (৬৪ বিলিয়ন ডলার) * অষ্টম ভিয়েতনাম (১৪ বিলিয়ন ডলার) * নবম বাংলাদেশ (১৩ বিলিয়ন ডলার)

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চারকারী রেমিটেন্স প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ প্রবাহ বাড়ছে। একই ভাবে দরিদ্র দেশগুলোর অর্থনীতিতে রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীলতাও ক্রমবর্ধমান। বিশ্ব ব্যাংকের এক হিসেবে দেখা গেছে, সারাবিশ্বেই বেড়েছে রেমিটেন্সের প্রবাহ। বিগত ২০১৭ সাল ছিল রেমিটেন্স প্রবাহের জন্য উজ্জ্বলতর বছর। আগের বছরের তুলনায় সারাবিশ্বে ২০১৭ সালে প্রবাসী আয় সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়েছে এবং চলতি ২০১৮ সালেও বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকবে।

গতকাল সোমবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিটেন্স পাঠানো বাবদ ব্যয়ও বেড়েছে। এ ব্যয় কমিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ে তহবিল স্থানান্তর খরচ কমানোর মাধ্যমে আরো বেশি রেমিটেন্স আহরণ করা সম্ভব। রেমিটেন্স অর্জনকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে নবম এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে তৃতীয়। দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিটেন্স আয়ে প্রথম ভারত এবং দ্বিতীয় পাকিস্তান। মালয়েশিয়া ও আরব আমিরাতের শ্রমবাজার জটিলতা না থাকলে বাংলাদেশের অর্জন আরো বেশি হতো।

প্রসঙ্গত, আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপের মতো অনেক উন্নত দেশ থেকে প্রেরিত রেমিটেন্স দরিদ্র ও অনুন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দক্ষ, আধা-দক্ষ শ্রমিক রফতানির মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলো এ আয় করে থাকে।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশে প্রেরিত রেমিটেন্স-এর পরিমাণ ৪৬৬ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪২৯ বিলিয়ন ডলার। এক বছরে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক এ বছর রেমিটেন্সের পরিমাণ আরো চার শতাংশ বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

তথ্যমতে, বিশ্বের সব অঞ্চলেই আলোচ্য বছরে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। রেমিটেন্স প্রবাহের তালিকায় শীর্ষে আছে ভারত। দেশটির আয় হয়েছে ৬৯ বিলিয়ন ডলার। ভারতের পরেই অবস্থান চীনের যার পরিমাণ ৬৪ বিলিয়ন ডলার। ফিলিপাইন ৩৩ বিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকো ৩১ বিলিয়ন ডলার আয় করে এ তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। পঞ্চম স্থানে থাকা নাইজেরিয়ার আয় হয়েছে এ সময় ২২ বিলিয়ন ডলার এবং ৬ষ্ঠ স্থানে থাকা মিসর আয় করেছে ২০ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের আয় ২০ বিলিয়ন ডলার এবং ভিয়েতনামের আয় ১৪ বিলিয়ন ডলারের কারণে তালিকায় দেশ দুইটির অবস্থান যথাক্রমে ৭ম ও ৮ম। বাংলাদেশ ১৩ বিলিয়ন ডলারের আয় করে ৯ম স্থানে অবস্থান করছে। দশম স্থানে রয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলার আয়কারী ইন্দোনেশিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসে রেমিটেন্স-এর অর্থ পাঠাতে ব্যয় হয় ২০০ ডলারে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। এ ব্যয় সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়, যা ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। রেমিটেন্স পাঠানোর এ খরচ কমিয়ে আনার সুপারিশ জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ব্যয় কমিয়ে আনতে পারলে রেমিটেন্স গ্রাহকরা আরো বেশি পরিমাণে অর্থ পাবে। বিশ্ব ব্যাংক সকল দেশকে অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে আরো দক্ষ প্রযুক্তি চালু করার পাশাপাশি অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ জানিয়েছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *