বাঙালির নারী দিবস

এ বি সাইদ,সিনিয়র রিপোর্টার দিনবদল নিউজ24ঃ ৯১০২ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে আসা ১শ’ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। এসময় নারীদের অধিকার রক্ষায় প্রতিবছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেয়া হয়।
এর প্রায় ৬৫ বছর পরে ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় নারী দিবস। সেই থেকে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশে প্রথম নারী দিবস পালিত হয় ১৯৭১ সালের ৮ মার্চ। এরপর থেকে প্রতিবছরই নারীদের সম্মান জানিয়ে দিবসটি পালন করে আসছে বাঙালিরা।
বাঙালির নারী দিবসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে হয় সেই সব কীর্তিমান নারীদের। তারা হলেন-
বেগম রোকেয়া
পুরোনাম রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন; যিনি বেগম রোকেয়া হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাঙালি নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ তিনি। তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত সাহিত্যিক, শিক্ষাব্রতী, সমাজসংস্কারক। বাংলার নারী জাগরণে এবং সমাজের সংস্কারে তার ভূমিকা অসামান্য।
বাঙালি মুসলমান সমাজের এই যে নারী-পুরুষের অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রথম যে কণ্ঠটি আওয়াজ তুলেছিল, সেটি বেগম রোকেয়ার। তিনি বাঙালি মুসলমানদের নব জাগরণের সূচনা লগ্নে নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণে নেতৃত্ব দেন।
জাহানারা ইমাম
বাঙালি জাতির যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে আলোর মশাল হাতে পথ দেখিয়েছেন জাহানারা ইমাম। তার হাতে গড়া গণআদালতের মাধ্যমেই বাংলাদেশে শুরু হয় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া।
শহীদ জননী জাহানারা ইমাম একাধারে কথাসাহিত্যিক ও বাংলাদেশের একজন শিক্ষাবিদ ছিলেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিরও সংগঠকও ছিলেন তিনি।
বীরকন্যা প্রীতিলতা
ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার বাঙালি নারীর সাহসের বাতিঘর। অগ্নিযুগের বীরকন্যা প্রীতিলতা যুগে যুগে বাংলার নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।
প্রীতিলতা আমাদের উজ্জীবিত করে সেই সময়ে সমাজের শত বাধা ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশমাতৃকার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার নারী আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন।
এছাড়া আরও অনেক মহীয়সী বাঙালি নারীর উন্নয়নে এবং সমাজের কুসংস্কার ও পশ্চাতপদতা দূরীকরণে ভূমিকা রেখেছেন। তাদের কল্যাণ আর সাহসেই বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নারী-পুরুষ সমতার লক্ষ্য অর্জনের পথে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পশ্চাৎপদতার অমানিশা কেটে পরিপূর্ণ আলোর পথে এগিয়ে যাক সোনার বাংলা-এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এই হোক প্রত্যাশা।
Attachments area