বিশ বছরে দেশের কিছু আলোচিত লঞ্চ দুর্ঘটনা

এ.এইচ.এম.শাহ্জাহান
নৌপথের যাতায়াতটা আরামদায়ক । তাই অনেকেই বেশি পছন্দ করে নৌপথে যাতায়াত করতে । তবে এই পথে মাঝে মাঝে এই পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে । বিভিন্ন করণেই এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে । যেমন: প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মুখোমুখি সংঘর্ষ, যান্ত্রিক ত্রুটি ইত্যাদি । তবে এই সকল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয় অনেক । মাঝে মাঝে স্বজনরা তাদের প্রিয়জনের মুখ দেখতে পায় না শেষ বারের মতো । কিছু লঞ্চডুবির কথা এখানে উল্লেখ করা হলো-
বুড়িগঙ্গায় মর্নিং বার্ড লঞ্চডুবি : ২০২০ সালের ২৯ জুন (সোমবার) সকালে রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায় । প্রাথমিকভাবে জানা যায দুই লঞ্চের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে ।
চাঁদপুরে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ : ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি মেঘনা নদীর চাঁদপুর সংলগ্ন মাঝ কাজীর চর এলাকার দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয় । এতে মারা যায় দুই যাত্রী ও আহত হয় ৮ জন ।
এমভি রিয়াদ : ২০১৯ সালের ২২ জুন মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে এমভি রিয়াদ নামের একটি লঞ্চের তলা ফেটে পানিতে ডুবে যায় ।এসময় অন্য ট্রলার গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে ।
এছাড়া ২০১৭ সালের ৩ লঞ্চডুবি : ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীর ওয়াপদা চেয়ারম্যান ঘাটের টার্মিনালে তীব্র স্রোতে ডুবে যায় তিনটি লঞ্চ।
গ্রীন লাইন : ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল বরিশাল সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর বেলতলা খেয়াঘাট এলাকায় বালুবাহী একটি কার্গোর ধাক্কায় এমভি গ্রীন লাইন-২ লঞ্চের তলা ফেটে যায়। এই দুর্ঘটনায় লঞ্চটি তাৎক্ষণিকভাবে তীরে নেয়ায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এম ভি মিরাজ: ২০১৪ সালের ১৫ মে মুন্সীগঞ্জের কাছে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি মিরাজ-৪ ডুবে যাওয়ার পর অন্তত ২২ জন যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুশ’র বেশি যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকা থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল।
পিনাক : ২০১৪ সালের ০৪ আগস্ট পদ্মায় স্মরণকালের ভয়াবহ নৌ-দুর্ঘটনায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় পিনাক-৬ নামের একটি লঞ্চ। উদ্ধার হওয়া মরদেহের মধ্যে ২১ জনকে শিবচর পৌর কবরস্থানে অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করা হয়।
এমভি কোকো: ২০১১ সালের ২৮ মার্চ চাঁদপুরের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় মেঘনা নদীতে দুটি লঞ্চের ধাক্কায় এমভি কোকো-৩ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে দুর্ঘটনা ঘটে।
এমভি নাসরিন-১ : অতিরিক্ত যাত্রী ও মালবোঝাইয়ের কারণে ২০০৩ সালের ৮ জুলাই ‘এমভি নাসরিন-১’ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া এলাকায় লঞ্চের তলা ফেঁটে যায় । এতে কিছু সময়ের মধ্যেই লঞ্চটি ডুবে যায় । এই দুর্ঘটনায় সরকারিভাবে ৬৪১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় । কিন্তু বেসরকারি হিসেবে লাশ উদ্ধার করা হয় প্রায় ৮০০ জনের ।
এমভি সালাউদ্দিন : ২০০২ সালের ৩ মে চাঁদপুরের ষাটনল সংলগ্ন মেঘনায় ডুবে যায় সালাহউদ্দিন-২ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চ। ওই দুর্ঘটনায় ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার ৩৬৩ যাত্রী মারা যান।
এমভি রাজহংসী : ২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ষাটনল এলাকায় মেঘনা নদীতে ‘এমভি জলকপোত’ ও ‘এমভি রাজহংসী’ নামের দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের সংঘর্ষ হয় । এতে প্রাণ হারায় রাজহংসীর ১৬২ যাত্রী ।