“ব্যাস্ততার শাসন বনাম অনুভূতির অনড় অবস্থান” ……….. নিলীমা সরকার
প্রেম ভালোবাসা, আনন্দ বেদনা, রাগ লজ্জা, ঘৃনা অজস্র অনুভূতি বাস করে প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে।
এই অনুভূতির রুপ প্রকৃতি আবার নির্ভর করে ব্যাক্তির শিক্ষা, জ্ঞান, মহত্ব, চরিত্র, পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার উপর ভিত্তি করে কম বেশি গাঢ় হালকা,নেতিবাচক, ইতিবাচক ভাবে।
প্রায়শই আমরা দেখে থাকি বা জেনে থাকি যে দুঃখ, কষ্ট, একাকীত্ব ভুলে থাকার জন্য ব্যাস্ততার আশ্রয় নিতে।
শতটা ব্যাস্ততা দিনের সমস্ত সময়টা জুরে দিলেও অনুভূতি গুলো হৃদয়ের তার নিজ অবস্থানে অনড় থাকে কেবল ব্যাস্ততায় আড়াল করে কিছুটা সময় পার করা মাত্র!
ব্যাস্ততার মাঝেও অপ্রাপ্তি, অবিশ্বাস,শুন্যতা তার অবস্থান থেকে ক্রমাগত হানা দিয়ে যাচ্ছে ব্যাস্ততম সময়ের অন্তরালে।
প্রতিটি অনুভূতির জায়গাগুলো তার নিজস্ব! ব্যস্ততা কখনোই পারেনা রাগ, কষ্ট আনন্দ কে মুছে ফেলতে। ব্যাস্ত থাকা আর ব্যাস্ত রাখা সময় অতিবাহিত করতে মিথ্যা শান্তনা বটে!
প্রেম ভালোবাসা আনন্দ ও যেনো ব্যাস্ত সময় কে আরো তরান্বিত করে তোলে আপন অনুভূতির ছন্দ মাধুর্যে!
তবে অনুভূতিগুলি যদি হয় হৃদয় ছোঁয়া সুখের অথবা হৃদয় ভাঙ্গা বেদনার।
মেকি প্রেম, আনন্দ আর অভিলাষের কষ্ট তো ক্ষনিক সময়ের অস্থায়ী অনুভূতি! তা দূরে রাখতে ব্যাস্ত না হলেও চলে! নির্দিষ্ট সময়ের পরে তারা ঝরে পরে।
আর প্রকৃত অনুভূতি তো হৃদয়ের অংশ কিনেই নেয় আজীবনের জন্য! মস্তিষ্ক জনিত গোলযোগ না হলে সেই সব আনন্দ বেদনা রাগ ঘৃণা লজ্জা অন্তিম পর্যন্তই অন্তরে অবস্থান করে। অজস্র মানুষের হৃদয়ে অজস্র অনুভূতি লুকিয়ে আছে ব্যাস্ততার শাসনে!
চোখ হতে জল গড়েনা বলেই যে কেউ কাঁদেনা তা তো নয়! যদি আত্মার আত্মীয় হও তবে বুকের বামের ধমণীর বহমান স্রোতে কান পেতে শোনো – কত আর্তণাদ সেখানে আঁছড়ে পড়ছে প্রতি স্পন্দনে!
কত ভালোবাসা সেখানে অপেক্ষায় আছে যা প্রকাশের আক্ষরিক রুপ বা দৃশ্যমান কোনো উপায় নেই!
এতটাই ঘৃণা অপেক্ষা করছে যা কোনো ভাষা বা উপায়ই প্রকাশ করার জন্য যথেষ্ট নয়!
এতটাই রাগ দাউ দাউ করে জ্বলছে যা নেভানোর জন্য এক সাগর জল ও যথেষ্ট নয়! এতটাই লজ্জাবোধ আছে যাতে নিজের মুখায়ব কল্পনা করার মত সাহস ও অবশিষ্ট নেই।
অনুভূতি গুলি যদি সত্যিকারের অনুভূতি তবে তার অবস্থান অনড় হৃদয়ের গহীনে,
ব্যাস্ততার শাসনে কিচ্ছু কম বেশি হয়না।