ভূয়া সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী গ্রেফতার

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারনার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কে. এম রুবেল (৩৫) নামের এক ভূয়া সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে ভূক্তভোগী নীলা রোজারিও বাদী হয়ে ওই প্রতারক রুবেল ও তার কথিত সাংবাদিক স্ত্রী রিমি আক্তারকে (২২) আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় একটি আত্মসাৎ ও প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃত রুবেল ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার আমজাদ হাট এলাকার পশ্চিম বসন্তপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। বর্তমানে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রায়েরদিয়া গ্রামের শশুরবাড়ীতে থাকতো।
উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামের নীলা রোজারিও জানান, ওরা স্বামী-স্ত্রী নিজেদের সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাইন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে নীলাকে বিনা সুদে ব্যাংক ঋণ, সরকারী প্লট ও ত্রানের টিন পাইয়ে দেওয়া এবং তার ভাগিনা রতনকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, ভাগনি শিপ্রা গমেজকে বিনা সুদে ব্যাংক ঋণ, সরকারী প্লট ও ত্রানের টিন পাইয়ে দেওয়া ও তার পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তি করার কথা বলে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
ওই গ্রামের ভূক্তভোগী হানিফ মীর জানান, বিনা সুদে ব্যাংক ঋণ, ত্রানের সরকারী টিন ও কম্বল পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে ৮০ হাজার এবং একই প্রলোভনে একই গ্রামের রিনা গমেজের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। অঞ্জলী নাগ জানান, চাকুরী ও সরকারী প্লট দেওয়ার প্রলোভনে তার স্বামী মনমোহনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে প্রতারক রুবেল।
উপজেলার জুগলী গ্রামের আবু নাঈম নামের এক ভূক্তভোগী জানান, অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক কে.এম রুবেল। এ ছাড়াও ওই এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে ব্যাংক ঋণ, অনুদান ও বিভিন্ন সহযোগীতার কথা বলে প্রায় ৮/১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান একটি সূত্র।
কালীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কে. এম রুবেল ও তার স্ত্রীর নিজেদেরকে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। সে প্রেক্ষিতে তাদের আসামী করে ভূক্তভোগী নীলা রোজারিও বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় আত্মসাৎ ও প্রতারণার একটি মামলা দায়ের করেন।