মাদক বিরোধী প্রচারণায় জসিম ফাউন্ডেশন সম্মাননা পেল

এবারো মাদক বিরোধী প্রচারণায় বেসরকারি সংস্থা জসিম ফাউন্ডেশন সম্মাননা পেল। মাদকের অপব্যবহার, অবৈধ পাচার ও মাদক বিরোধী জসীম ফাউন্ডেশন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্নমূখী কার্যক্রম পরিচালনা সম্পন্ন করেছে । সারা বছর ব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকে । বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বস্তি ও বিশেষ করে বেঁদেপাড়াগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । এগুলোর মধ্যে আছে- আলোচনা সভা, ক্যাম্পেইন, বাসায় বাসায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করা, লিফলেট, ব্রুসিয়ার, স্টিকার, ব্যানার ও ফেস্টুন এগুলো বিতরন, লাগানো ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জনসাধারনকে সচেতন করা । এক্ষেত্রে জসীম ফাউন্ডেশন যথার্থ ভূমিকা রেখেছে ।
ফটো জার্নালিষ্ট মিলনায়তনে এন্টি ড্রাগ সোসাইটির উদ্যোগে ‘মাদকমুক্ত সমাজ গঠন ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক সালাউদ্দিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্রাব) সভাপতি আবু সালেহ আকন, জসিম ফাউন্ডেশন এর ফাউন্ডার প্রেডিন্ডেন্ট এস এম জসিম উদ্দীন, বিশিষ্ট গীতিকার, সুরকার, লেখক ও কলামিষ্ট কবি প্রাকৃতজ শামীম র”মি টিটন, সভায় সভাপতিত্ব করেন, এন্টি ড্রাগ সোসাইটির সভাপতি ও বিজনেস ডাইজেস্টর সম্পাদক, প্রকাশক জনাব মোহাম্মদ শহীদুলাহ প্রিন্স।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক সালাউদ্দিন মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, মাদক একটি সামাজিক ব্যাধি। বিভিন্ন কারণে এদেশের ছাত্র, তরুণ ও যুব সমাজ মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। যারা আগামীতে দেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দেবে তারা যদি মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসা করে তাহলে দেশের কাঙ্গিত উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। সন্তান সহ পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী মাদকে জড়িয়ে পড়লে তাকে ভয়াবহ এ নেশা থেকে ফিরিয়ে আনতে সমাজের প্রত্যেককে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সর্বোপরি মাদক রোধে পরিবার থেকে আন্দোলন শুরু করলে সমাজ ও দেশ মাদকমুক্ত হবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াস সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন হয়। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, মাদক সেবক ও মাদক বিক্রেতা উভয়ে সমাজের অংশ। তাদেরকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রন করা গেলে সুফল পাওয়া যাবে। সে লক্ষ্যে সকলের সাথে মতবিনিময় করে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। অসৎসঙ্গ ও হতাশা মাদক সেবনে উৎসাহিত হয়। জনসচেতনতা সৃষ্টি করা গেলেই মাদক থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সকল শ্রেণী ও পেশার নাগরিকগণ স্ব স্ব অবস্থান থেকে অবদান রাখলেই এ অবক্ষয় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সাল এর মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশের প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। আইন শৃংখলা বাহিনী, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সমাজের সচেতন অংশের সমন্বয়ে মাদক থেকে উত্তরনের জন্য একসাথে কাজ করে যেতে হবে তা না হলে সরকার একার পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়।
পরিশেষে তিনি তার পক্ষ থেকে যে কোন প্রকার সহযোগীতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সঠিক ভাবে কাজ করছে না। দেশের কোন জায়গায় কতটি মাদকের স্পট আছে তার তালিকা আমার কাছে আছে। প্রয়োজন হলে আমি তালিকা দিতে পারব ১ থেকে ২ ঘন্টার মধ্যে।
তিনি বলেন, আইন শৃংখলা বাহিনীর কথা আমাদের দেশের আইন শৃংখলা বাহিনী সঠিক ভাবে কাজ করছে না। তারা যদি সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে দেশে মাদকাসক্ত থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি পল্টন থেকে গুলিস্থান যান তাহলে দেখবেন ২০-৩০ ছোট বয়সের ছেলে মেয়ে পলিথিনের ভিতরে কি যেন খাচ্ছে। সেটা আপনারা খেলা ও বলতে পারেন। আসলে সেটি হচ্ছে জুতার আঠা সেই আঠা দিয়ে তারা পলিথিনের মাধ্যমে নেশা করছে। কিন্তু এর প্রতিরোধ করার যেন নেই।
জসিম ফাউন্ডেশনের কাযক্রম:
জসিম ফাউন্ডেশনের এস এস জসিম উদ্দিন এর পরিচালিত নিজ উদ্যোগে স্কুল তবে আর দশটির চেয়ে একটু ব্যতিক্রমধর্মী। এটি সমাজের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পথ শিশুদের স্কুল। যারা তিনবেলা পেট পুরে খেতে পায় না। পায় না ঠিকমতো লেখাপড়ার সুযোগও। মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত এসব শিশুদের জন্য উদ্যোগী হয়ে উঠেছে জসিম ফাউন্ডেশন।
তিনি আরও বলেন, সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে তার ফাউন্ডেনটির কাযক্রম আর বেগবান করতে পারবেন। সরকার যদি এ ব্যাপারে একটু নজর দেয় তাহলে তিনি তার স্বপ্নে পৌছেতে পারবেন। তিনি আশা করেন সমাজের ছিন্নমুল শিশুদের নিরক্ষর থেকে শিক্ষিত করে তুলতে সকলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে। সোনার বাংলার অসহায় ছিন্নমুল শিশুদের শিক্ষিত করে তিনিও হতে চান এর গর্বিত অংশীদার।
তিনি মানব সেবায় অবদান সরূপ এশিয়ান জার্নালিষ্ট চ্যারেটিবল সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন এর নিকট থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন যে কোন সম্মাননা পাওয়া আনন্দের বিষয়। সম্মাননা দিয়ে আমাকে আরও বেশী ঋণী করে ফেলেছেন। সম্মাননা মানুষকে কাজ করার আগ্রহ তৈরী করে দেয়। সম্মাননা পাওয়ায় তিনি বেশ খূশি। অদুর ভবিষ্যতে তিনি তাঁর কাযক্রম অব্যাহত রাখবেন।
তিনি আরও বলেন কিছুদিনের মধ্যেই ঢাকা ক্লিন সিটি নামে প্রচার প্রচারনা করবেন। তিনি তার সংস্থার উদ্যোগে করবেন বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
ঈদে বস্তিবাসীর অসহায় ও চিহ্নমূল শিশুদের কাপড় বিতরণ করবেন বলে জানান। তিনি বলেন ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয় কিন্তু সবাই এগিয়ে আসলে আমাদের দেশে গরীব থাকবে না। এজন্য সবাইকে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।