প্রধান বিচারপতির ছুটিতে কি বিএনপির স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে? যুবলীগ চেয়ারম্যান

0
faruk

faruk

বিশেষ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিন ৭১ ও ৭২ নং ওয়ার্ড ( সাবেক মান্ডা ইউনিয়ন) এর ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল আজ ১৩ অক্টোবর রোজ শুক্রবার সকাল ১০.০০ টায় মান্ডা গ্রীন মডেল টাউন মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিন সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, প্রধান অতিথি যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, বিশেষ অতিথি সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশীদ, প্রধান বক্তা ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অসুস্থতা জনিত ছুটি নিয়ে বিএনপি অনেক কথাই বলছে। এ যেন স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনার আর্তনাদ। প্রধান বিচারপতির ছুটিতে কি বিএনপির স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে? তাদের কি কোন পরিকল্পনা কিংবা ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে? এজন্যই কি বিএনপির এতো কথা, এতো কান্নাকাটি।

বিএনপি যখন বিচারপতি সিনহার অসুখ নিয়ে সন্দেহ করছে, তখন দেশের ষোল কোটি মানুষ বেগম জিয়ার অসুখ নিয়ে কৌতুক করছে। অসুখের ভান করে বেগম জিয়া আর তার গুণধর পুত্র লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছে। ‘অসুখ’ বিষয়টা বিএনপি সবসময়ই ষড়যন্ত্রের সিঁড়ি হিসেবেই ব্যবহার করেছে। তাদের প্রতিষ্ঠাতা খুনী একনায়ক জিয়া এটা শুরু করেছিলেন। চলুন ফিরে যাই সেই সময় ২১ এপ্রিল ১৯৭৭। বঙ্গভবনে সশস্ত্র অবস্থায় ঢুকলেন সেনা প্রধান জিয়াউর রহমান। তাঁর সঙ্গে তাঁর সশস্ত্র অনুগত বাহিনী। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম তখন বঙ্গভবনে তাঁর শয়ন কক্ষে, বিশ্রামে। সেনাপ্রধান জিয়া অপেক্ষা করতে পারলেন না। চলে গেলেন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির শয়ন কক্ষে। রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র সেনা সদস্য দেখে ভড়কে গেলেন। কালো সানগ্লাসে ঢাকা জিয়ার চোখ। কর্কশ স্বরে প্রেসিডেন্টকে বললেন, ‘মি. প্রেসিডেন্ট ইউ আর সিক।’ প্রেসিডেন্ট সায়েম প্রথমে বুঝতে পারলেন না। তিনি বললেন, ‘নো আই এম ফাইন’। এবার জিয়া কর্কশ কণ্ঠে চিৎকার করে বললেন, ‘অফ কোর্স ইউ আর সিক। ইউ উইল রিজাইন নাও।’ বিচারপতি সায়েম ততক্ষণে বুঝলেন। একজন সেনা অফিসার একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘প্লিজ সাইন।’ বিচারপতি সায়েম সেটা পড়লেন, তাতে লেখা শারীরিক অসুস্থতার জন্য আমি রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। বহুবছর পর বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, তাঁর আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থে এই ‘অসুস্থতার’ কথা প্রকাশ করেন। শুধু প্রেসিডেন্ট সায়েম নন, জিয়াউর রহমান তাঁর শাসনামলে ৮ জন সচিব, ৬ জন বিচারপতি, ১২ জন বিভিন্ন কর্মকর্তাকে অসুস্থ বানিয়ে পদত্যাগ করান।

বিএনপি যখন প্রধান বিচারপতির অসুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন করছে, সন্দেহ করছে, তখন আমার মনে প্রশ্ন এলো, মানুষের অসুখ, মৃত্যু এসব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কেন? একজন মানুষ তো যেকোনো সময়েই অসুস্থ হতে পারেন। ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, ঠিকঠাক কাজ করছিলেন, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এখনতো হাসপাতালের বিছানায় কাটছে তাঁর দিন। স্বাভাবিক একজন মানুষও হঠাৎ অসুখে পড়তেই পারেন। বলে কয়ে ক’জন অসুস্থ হন? কিন্তু এই ভাবনার মধ্যে হঠাৎ ফ্লাশব্যাকে পুরোনো দিনের ঘটনাগুলো ভেসে উঠল। তখনই আমি আবিষ্কার করলাম, কেন বিএনপির ‘অসুখ’ বিষয়টায় ঘোর অবিশ্বাস। কারণ তাঁদের প্রতিষ্ঠাতা নেতা তো এই কাজটি করেছেন সব সময়। ‘অসুস্থ’ বলে সুস্থ মানুষকে ক্ষমতা থেকে অস্ত্রের মুখে নামিয়েছেন। একারণেই অসুখে বিএনপির এত অবিশ্বাস।

এই অবিশ্বাসের আরও কারণ আছে। বেগম জিয়া অসুখের চিকিৎসার জন্য মধ্য জুলাইয়ে গেলেন লন্ডনে। তিনমাস হতে চলল, এখনো তাঁর অসুখের খবর পেলাম না। তিনি কেমন আছেন, দেশবাসী জানে না। যে দলের প্রধান নেতা ‘অসুখ’ এর ভান করে বিদেশে অবকাশ যাপন করেন, সে দলের পাতি নেতারা কীভাবে ‘অসুখ’ বিশ্বাস করবেন। কীভাবে বুঝবেন, এই অসুস্থতা বেগম জিয়ার অসুস্থতা নয়? শুধু প্রধান নেতা নয়, দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক জিয়াও লন্ডনে দীর্ঘ নয় বছর। প্রায়ই বিএনপির নেতারা তারস্বরে চিৎকার করে বলেন,’ তার চিকিৎসা চলছে, এজন্যই তিনি লন্ডনে।’ কী দূরারোগ্য ব্যাধি তারেক জিয়ার যার চিকিৎসা নয় বছরেও শেষ হয় না। আহা কি সুন্দর অসুখ। যে অসুখে জিমে যাওয়া যায়, ক্যাসিনো খেলা যায়, শপিং করা যায়- শুধু দেশে আসা যায় না! বড়ই চমৎকার আসুখ বৈকি! একারণেই বিএনপির ‘অসুস্থতা’ শব্দে ভয়ানক সন্দেহ। অসুখে তাঁদের প্রচন্ড অবিশ্বাস। তাঁদের দলের সংস্কৃতিই হলো ‘অসুস্থতা’ কে মিথ্যার প্রতিশব্দ করা। তাই প্রধান বিচারপতির অসুখ তাঁরা বিশ্বাস করবেন না, এটাই তো স্বাভাবিক।

shamrat

মান্ডা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সেলিম এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন যুবলীগ দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু, দক্ষিন সহ সভাপতি মাইনউদ্দিন রানা সারোয়ার হোসেন মনা,আনোয়ার ইকবাল সান্টু, নাজমুল হোসেন টুটুল, এনামুল হক আরমান, মুরসালিন আহম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক জাফর আহম্মেদ রানা, ওমর ফারুক, সাংগঠনিক, মিজানুর রহমান বকুল, কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এমদাদুল হক এমদাদ, গাজী মাজাহারুল ইসলাম, খন্দকার আরিফউজ্জামান, সভা পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক আরমান হক বাবু প্রমুখ।

সম্মেলন শেষে মান্ডা ইউনিয়ন যুবলীগ কমিটি বিলুপ্ত করে ৭১ ও ৭২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। ৭১ নং ওয়ার্ডে সভাপতি পদে হাজী বিপ্লব, সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আহম্মেদ সেলিম, সহ সভাপতি পদে সাজিদ আহম্মেদ সাজু, যুগ্ম সম্পাদক পদে খোকন, সাংগঠনিক পদে মোঃ জালাল উদ্দিন কে নির্বাচিত করা হয়। ৭২ নং ওয়ার্ডে সভাপতি পদে সোলেমান মেম্বর, সাধারণ সম্পাদক পদে জাবেদ মিঞা, সহ সভাপতি পদে হাবিবুর রহমান কাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অমিত চৌধুরী কে নির্বাচিত করা হয়।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *