মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি হত্যার পরে দুই বাংলাদেশি উধাও

0
70034_b6

70034_b6
একজন বাংলাদেশি শ্রমিককে হত্যা এবং তার খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। আলোর সেতার মালয়েশিয়ার খেদা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী। কুয়ালালামপুর থেকে ৪শ’ কি.মি. দূরবর্তী এই শহরে একটি একতলা বাড়িতে কয়েকটি খণ্ডে বিভক্ত অবস্থায় এই বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকের লাশ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। গত ১৩ই জুন দুপুর প্রায় ১টার দিকে তার লাশ পায় পুলিশ।

খেদা পুলিশের প্রধান কমিশনার দাতুক ইউসুফ বলেছেন, নিহত ব্যক্তির নাম মফিন উদ্দিন (৩৮)। তিনটি প্লাস্টিকের ব্যাগে তার মৃতদেহ কিচেন ক্যাবিনেটে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। নিহত ব্যক্তির বান্ধবী তাঁর কোনো হদিস না পেয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছিল। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, থানায় ডায়েরি করার পরে ওই বান্ধবীর পরামর্শে পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। বাড়িটি তালাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই মহিলার কাছে থাকা একটা বিকল্প চাবি দিয়ে পুলিশ তালা খুলতে সক্ষম হয়। লাশ উদ্ধারের পরে ময়না তদন্তের জন্য সুলতানা বাহিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে এটা দেখা গেছে যে, নিহত ব্যক্তির মালয়েশিয়ায় কাজ করার বৈধ কাগজপত্র ছিল। এবং গত ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ওই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। পুলিশ ওই বাড়িতে বসবাসরত অপর দুই বাংলাদেশিকে খুঁজছে। তারা হলেন মো. জুলফিকার (৩৭), তিনি একটি হিমায়িত খাদ্যের দোকানে সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করেন। অপর ব্যক্তি হলেন নূর, তিনি একজন কারখানা শ্রমিক। পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, ওই দুই ব্যক্তি এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিতে পারেন।

খেদা পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য দেয়া হয়েছে যে, নিহত আজাদের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বান্ধবী গত শনিবার ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অপর দুই বাংলাদেশি তাঁকে গৃহে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। ওইদিন তিনি লক্ষ্য করেন যে, ওই দুইজনের একজনের হাতের কব্জিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, তালা খোলার পরে তারা দেখেন বাড়িতে কেউ নেই। এরপর পুলিশ তল্লাশি চালাতে গিয়ে লক্ষ্য করে যে কিচেন কেবিনেটের পেছন থেকে কালো রঙের পানি চুইয়ে পড়ছে। এবং একটা দুর্গন্ধও বাতাসে ছড়িয়ে আছে। পুলিশ তখন কিচেন কেবিনেটের নিচে পরীক্ষা করতেই তিনটি প্লাস্টিকের ব্যাগ তাদের নজরে আসে। ব্যাগগুলোর মুখ বন্ধ ছিল। একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার শরীর ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। যদিও পুলিশ বাড়িটি থেকে কোনো অস্ত্র খুঁজে পায়নি। গত পাঁচ মাস ধরে নিহত ব্যক্তি এই দুই বাংলাদেশির সঙ্গে এ ঘরে অবস্থান করছেন। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা এটা খতিয়ে দেখছি।

দি স্টার অনলাইন জানিয়েছে, নিহতের পুরো নাম আজাদ লতে মফিয়ান উদ্দিন। তাঁর খোঁজে গত মঙ্গলবার সকালে তাঁর ৩১ বছর বয়সী বান্ধবী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৪ দিন আগে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *