যে কারণে সাইফউদ্দিন ৭৪ নম্বর জার্সি পরে খেলেন

জাতীয় দলে তার জার্সি নম্বর ‘৭৪।’ আর দেশ ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান খেলে ৭৫ নম্বর জার্সি গায়ে চাপিয়ে। কিন্তু জানেন কি? জাতীয় দলে অভিষেকের আগে যুবদলে (অনূর্ধ্ব-১৯) মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ঐ ৭৫ নম্বর জার্সি পরেই খেলতেন। এবং সেটা সাকিব আল হাসান ৭৫ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেন, সে কারণেই।
আসলে পারফরমার সাকিব তার অনেক প্রিয়। তার ৭৫ নম্বর জার্সিটাও অনেক পছন্দের। কথাবার্তায় পরিষ্কার, আগামীতে মানে সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে গেলে ঐ ৭৫ নম্বর জার্সি পেতে আগ্রহী হবেন সাইফউদ্দিন।
২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরুর ঠিক আগে যখন জার্সি নম্বর ঠিক করা হচ্ছিল, তখন স্বপ্নের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে হওয়া একটি কথোপকথনের স্মৃতি এখনো বয়ে বেড়ান সাইফউদ্দিন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের ইউটিউব লাইভে তার নিজের ৭৪ নম্বর জার্সি গায়ে চাপানোর গল্পটা শেয়ার করেন জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার তারকা।
সাইফউদ্দিন বলেন, ‘সাকিব ভাই হলেন আমার প্রিয় ক্রিকেটার। আমি তার খুব বড় ফ্যান। আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলতাম, তখন ৭৫ নম্বর জার্সি গায়ে দিয়ে খেলতাম। ২০১৭ সালে মাশরাফি ভাই যখন শ্রীলঙ্কা সফরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টানেন, ঐ সফরেই আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। আমি কত নম্বর জার্সি গায়ে দেব তা নিয়ে কথা হচ্ছিল। সাকিব ভাই এসে বললেন-কি, ৭৫ নম্বর জার্সি নিবা নাকি? নাহ, আরও ৫-৬ বছর আমি খেলি, তারপর নিও। তখন আমি বলি- না ভাই, এখনই ৭৫ নম্বর জার্সির ওজন ও ভার আমি বহন করতে পারবো না। আমি বরং আপনার পাশে থাকি। তাই ৭৪ নম্বর জার্সি বেছে নেওয়া।’
এছাড়া তার আরও একটি বড় স্মৃতি আছে সাকিব আল হাসানের সাথে, সেটা ২০১০ সালের ঘটনা। সাইফউদ্দিন তখন কিশোর। খেলেন অনূর্ধ্ব-১৫ দলের হয়ে। সেই দলের এক ট্রেনিং সেশনে সাকিব অনুজপ্রতিম ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করতে গিয়েছিলেন অতিথি বক্তা হয়ে। সেদিনের সে কিশোর সাইফউদ্দিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের কথা শুনেছিলেন মন্ত্রমুগ্ধর মত। তার ভাষায়, ‘আমি শুধু চেয়েই ছিলাম সাকিব ভাইয়ের চেহারার দিকে।’
সাকিব তার বক্তব্য শেষে যখন চলে যাচ্ছিলেন, তখন জুনিয়র ক্রিকেটাররা তার সাথে ছবি ও সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু কোন মোবাইল ছিল না সাইফউদ্দিনের হাতে। তাই সেলফি তোলা হয়নি। সতীর্থ এক ক্রিকেটার ছবি তুলছিলেন, পেছন থেকে সাইফ শুধু গলা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন সে ছবিতে।
আজও সে ছবি অনেক যত্ন করে রেখেছেন সাইফউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সত্যি জীবন কত অদ্ভুত! একদিন মোবাইল ছিল না, সাকিব ভাইয়ের মত বিশ্বমানের ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হয়নি। আজ এক দলে খেলছি। এক ড্রেসিংরুম শেয়ার করছি। যখন খুশি কথা বলতে পারছি। এটা যে কত বড় ভালো লাগা, বলে বোঝানো যাবে না।’