রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশকেই মাতৃভূমি মনে করতেন: চীনা রবীন্দ্র গবেষক

0
1485963484

1485963484

দিনবদল ডেক্স: বাঙালির মাসব্যাপী প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭’ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ গ্রন্থমেলা ও ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৭’র শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সভাপতিত্ব করেন। সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ, চীনা রবীন্দ্র গবেষক ও লেখক অধ্যাপক ড. ডং ইউ চেন, ভারতের লেখক ও গবেষক অধ্যাপক চিন্ময় গুহ, অস্ট্রিয়ার কবি মেনফ্রেড কোবো, জার্মানির কবি টোবিয়াস বুরর্ঘাট ও পুয়ের্তোরিকোর কবি লুস মারিয়া লোপেজ শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন।

অধ্যাপক ড. ডং ইউ চেন বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশকেই তার মাতৃভূমি মনে করতেন। এ অঞ্চলকে হৃদয়ে ধারণ করেই তিনি ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি…’গানটি লিখেছিলেন।
চীনা এ গবেষক শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলায় তার বক্তৃতা প্রদান করে বলেন, রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা… গান বা কবিতাটি পাঠ করে যে কোন ভাষাভাষি তার মাতৃভূমির প্রতি টান অনুভব করবেন। রবীন্দ্রনাথ পড়ে চীনাভাষিরা যেমনটি অনুভব করেন তাদের মাতৃভূমির জন্য।

তিনি জানান, প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর গবেষণার পর ২০১৫ সালে চীনা ভাষায় ৩৩ খণ্ডে পুরো রবীন্দ্র রচনাবলী প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও ভারতের রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক পবীত্র সরকার তাকে এ কাজে সহায়তা করেছেন।

চীনা এ গবেষক বলেন, রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্মে জ্ঞানের যে সুধা রয়েছে তা শুধু বাংলার জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য। আর এ কারণেই তিনি বিশ্বকবি।

রবীন্দ্রনাথ শুধু একজন ডং ইউচেনের একার কবি নয়, সমগ্র চীনাবাসীর কবি উল্লেখ করে এ গবেষক বলেন, রবীন্দ্রনাথকে পড়া ও জানার মাধ্যমে চীনাবাসী বাঙালির জীবনধারা সম্পর্কেও জানতে পারছে। রবীন্দ্রনাথের মাধ্যমেই বাংলাদেশ ও চীনের জনগণের মধ্যে ভাবের এ আদানপ্রদান অব্যাহত থাকবে।

মেনফ্রেড কোবো বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন জর্জ হ্যারিসনের কনসার্টের পর থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি জানতে শুরু করেছেন।

লুজ মারিয়া লোপেজ বলেন, রবীন্দ্রনাথকে ভালবেসেই তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক উন্নয়নসহ নারীর ক্ষমতায়নে বেশ এগিয়ে গেছে জেনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

চিন্ময় গুহ বলেন, ভাষাকে ভালবেসে যে দেশের জন্ম হয়েছে, সেখানে আমন্ত্রিত হয়ে আসতে পেরে তিনি শিহরিত।

বাংলাদেশের বরিশাল তার পূর্বপুরুষের ভিটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পাশে বসে নিজেকে যেমন গর্বিত মনে করছেন, তেমনি হৃদয়ের তানপুরায় পূর্বপুরুষের ডাক অনুভব করছেন।

গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী মেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পরপরই পাঠক-দর্শনার্থীদের ঢল নামে মেলা চত্বরে। তবে চত্বর ঘুরে দেখা গেছে ২০ ভাগ স্টল এখনও অগোছালো রয়েছে।

মেলা ঘুরে ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গছে, এবার মেলার স্টল বিন্যাস বেশ গোছালো হয়েছে। পাঠকদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরার জন্য প্রচুর খোলা স্পেস রয়েছে। শিশুকর্ণারটি বেশ কালারফুল হলেও একটু ঘিঞ্জি হয়ে গেছে বলেও তারা জানান।বাসস

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *