শেখ রাসেল উপজেলা মিনি স্টেডিয়াম প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে সংসদীয় কমিটির প্রশ্ন

দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ প্রকল্পের প্রথম ধাপে নির্মাণ হচ্ছে ১৩১টি স্টেডিয়াম। এতগুলো স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য কাজ পেয়েছে মাত্র ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হওয়া নিয়েও আশঙ্কা করছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
এ প্রকল্প বাস্তবায়ন যাতে নির্ধারিত সময়ে এবং সঠিকভাবে শেষ হয় তার তদারকির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। এজন্য তিন সদস্যের একটি সাব-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাককে প্রধান করে গঠন করা কমিটির দুই সদস্য হচ্ছেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক ক্রিকেটার নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও সংরক্ষিত মহিলা আসন-২৮ এর সংসদ সদস্য বেগম আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার কমিটির সভায় আমরা সাব-কমিটি পুনর্গঠন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে প্রত্যেক উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। আমরা চাই এ প্রকল্প যেন নির্ধারিত সময়ে এবং সঠিকভাবে শেষ হয়। সাব-কমিটি আগামী ১০ জুলাই প্রথম সভায় বসবে। এ কমিটি খতিয়ে দেখবে কোথায় কী সমস্যা আছে।’
প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পে কী সমস্যা চোখে পড়েছে? ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে ধাপে ধাপে। প্রথম ধাপে ১৩১টি স্টেডিয়াম নির্মাণ হবে। আমরা চাচ্ছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাতে সব স্টেডিয়াম নির্মাণ শেষ হয়; কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এতগুলো স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য মাত্র ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে। কমিটি দেখবে সেটা কীভাবে হলো। মাত্র ১৪ প্রতিষ্ঠান এত জায়গায় কী করে কাজ করবে? তাদের পক্ষে একসঙ্গে এতগুলো কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব কি না তাও খতিয়ে দেখবে আমাদের কমিটি’- বলেছেন জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
কমিটির সদস্য বেগম আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন, ‘এ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আগ্রহে হাতে নেয়া হয়েছে। আমাদের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। ১০ জুলাই প্রথম সভায় বসছি আমরা। নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ এখনও আমাদের কাছে নেই। তবে সভা করলেই বুঝতে পারব কোথাও কাজের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। যদি অভিযোগ পাই তাহলে আমরা ওই সব জায়গা পরিদর্শন করে তা খতিয়ে দেখব।’
একটা প্রশ্ন তো উঠেছে ১৩১টি উপজেলায় গিয়ে মাত্র ১৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে কি না। ‘আমরা প্রথম সভায় দেখব কোন কোন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে। তাদের স্টেডিয়ামগুলো কীভাবে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। আসলে সভা না করা পর্যন্ত বলতে পারব না কিছু। তবে একটা বিষয় হলো- প্রকল্পটি যাতে সঠিকভাবে শেষ হয় সেদিকে খেয়াল থাকবে আমাদের। স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ ভালোভাবে তদারকি করব আমরা’- বলেছেন বেগম আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
১৩১টি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য মাত্র ১৪ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপের ১৩১ স্টেডিয়ামকে ভৌগোলিক দিক বিবেচনা করে ১৪টি স্লটে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছি। ৫২ স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ সহসাই শুরু হবে। কাজগুলো তো অনেক ছোট। গড়ে প্রতিটি স্টেডিয়াম নির্মাণের বাজেট ৪২ লাখ টাকার মতো। হাতে অনেক সময়। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে আমাদের এ স্টেডিয়ামগুলো বুঝিয়ে দিতে হবে। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’