সঞ্চয়ের সব অর্থ দান করলেন ছোট্ট শিশুটি, তুলে দিলেন প্রশাসকের হাতে

মাহমুদ ফয়সাল: অনুরাধা, আট বছর বয়সী দ্বিতীয় শ্রেণি এক ছাত্রী। নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী বিশ্বনাথের বাসিন্দা অনুরাধা। করোনার করাল থাবায়, তার কোমল হৃদয়টাও ভেঙে গেছে। প্রতিদিন টিভির সামনে বসলেই দিনমজুর, খেটে খাওয়া, অভুক্ত মানুষের হাহাকার তাকে বিষণ্ণ করে তুলেছে। ছোট্ট শিশুটি বিবেকের তাড়নায়, অভুক্ত মানুষদের মুখে দুমুঠো আহার তুলে দিতে নিজের সঞ্চয় করা প্লাস্টিকের ব্যাংকটি হাতে নিয়ে, মাকে সাথে রওনা দিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে।
কিছুক্ষণ পরেই হাজির হয়ে যান নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস তখন অফিসেই ছিলেন। তিনি ছোট্ট অনুরাধাকে দেখেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘এটা (ব্যাংক) নিয়ে কেন এসেছো মা? অনুরাধার সহজ সরল উত্তর, ‘আংকেল যারা না খেয়ে আছে, এই টাকাটা তাদেরকে দিবেন’।
ছোট্ট অনুরাধার মুখের এমন মানবিক ভরসাব্যঞ্জক উত্তর শুনে অবাক হয়ে যান জেলার প্রশাসক। বিস্ময়বিহ্বল চোখে তাকিয়ে থাকেন অনুরাধার নিষ্পাপ মুখের দিকে।
অবশ্য বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজের অনুভূতি শেয়ার করে একটি পোস্ট করছেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘অবাক হয়ে এই দেবশিশুটির মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তার চোখের তারায় আলোর ঝিলিক। ঐ আলোতে আঁধার কাটার ডাক’।
পোস্টে তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে লেখেন, একটি মানবিক পথ চলার উপায় দেখিয়ে গেল অনুরাধা। দেশবাসী ভয় নেই। প্রত্যেকে থাকি পরের তরে। এই যুদ্ধে যে আমাদের জয়ী হতেই হবে।