সাতখুনের মামলাগুলো চাঞ্চল্যকর, তাই সময় দেয়া যাবে না: হাইকোর্ট

দিনবদল ডেক্স: নারায়ণগঞ্জের সাতখুনের মামলাগুলো ‘সেনসেশনাল মামলা’। এগুলোতে সময় দেয়া যাবে না। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জাঙ্গাহীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এর আগে সাতখুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত কৌসুলী নিয়োগের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল। আদেশ দেয়ার পূর্বে জামাল উদ্দিন নামে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক আদালতকে বলেন, জামাল উদ্দিন রায় ঘোষণার সময় পলাতক ছিলেন। পরে তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এখন তিনি কারাগার থেকে বিলম্ব মার্জনা সহকারে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেছেন। ওই আপিলটি হাইকোর্টে বিচারাধীন। অতএব, এই আবেদনের উপর আদেশ না দেয়া পর্যন্ত তার রাষ্ট্রনিযুক্ত কৌসুলীর বিষয়ে এই আদালতের আদেশ দেয়া ঠিক হবে না। এরপর তিনি সময় পার্থনা করেন।
জবাবে আদালত বলেন, এ মামলাগুলো চাঞ্চল্যকর। সময় দেয়া যাবে না। এ পর্যায়ে আদালত রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহিরের বক্তব্য জানতে চায়।
জহিরুল হক জহির সুনির্দিষ্ট করে বক্তব্য না দেয়ায় আদালত বলেন, আপনাকে বিষয়টি পরিস্কার করতে হবে। আমরা কি তাকে সময় দেব? এরপর আদালত সোমবার পর্যন্ত আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন এবং ওই দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামাল উদ্দিনের বিলম্ব মার্জনার দরখাস্ত হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছেন কি না সে বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে তার আইনজীবীকে বলেন। ওই দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যান্য পলাতক আসামিদের পক্ষেও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে আদেশ দেবে আদালত।
আসামিপক্ষে এডভোকেট এস এম শাজাহান ও এম আমিনুল উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় গত ১৬ জানুয়ারি সাত খুন মামলায় সেনাবাহিনীর বরখাস্তকৃত লে.কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন। বাকি নয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে যারা কারাগারে আটক রয়েছেন তারা হাইকোর্টে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেছেন। এছাড়া নিন্ম আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। এরপরই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এই মামলা দ্রুত শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুতের জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেয়। পরে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা থেকে পেপারবুক প্রস্তুতের জন্য মামলার সকল নথি বিজি প্রেসে পাঠানো হয়। পেপারবুক প্রস্তুত করে রবিবার বিজি প্রেস কর্তৃপক্ষ তা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেয়। এ পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।