সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ আবার ৪ দিনের রিমান্ডে

0
image-127463-1596428077bdjournal

কক্সবাজারে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত পুলিশসদস্যের পুনরায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাবের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে এই আদেশ দেন আদালত।

সোমবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার সাত আসামিকে হাজির করে র‌্যাব। তাঁরা হলেন, টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত ও এসআই লিটন মিয়া এবং কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।

র‌্যাব আদালতের কাছে আসামিদের পুনরায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ বেলা সাড়ে তিনটায় আসামিদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে আদালত আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ইতিমধ্যে এসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুনের রিমান্ড শেষ করে র‌্যাব। গত কয়েক দিন তাঁরা জেলা কারাগারে ছিলেন। সোমবার সকালে কারাগার থেকে তাঁদের আদালতে নেওয়া হয়। আর সাত দিনের রিমান্ড শেষ করে সিনহা হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি ওসি প্রদীপ, লিয়াকত আলী ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকেও আদালতে নিয়ে যায় র‌্যাব।

আদালত প্রাঙ্গণে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ওসি প্রদীপসহ আসামিরা সিনহা হত্যার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। আরও তথ্যের জন্য পুনরায় সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত পুলিশের সাত আসামিকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আটক করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রা দেবনাথকে আটক করা হয়। দুজনই এখন জামিনে মুক্ত।

সিনহা হত্যা মামলার ১৩ আসামির মধ্যে তিনজন রিমান্ড শেষে জেলা কারাগারে অবস্থান করছেন। তাঁরা হলেন পুলিশের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আইয়াস। সিনহার বোনের মামলায় মারিশবুনিয়ার এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। র‌্যাবের হেফাজতে রয়েছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ। সিনহা হত্যা মামলা তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বর্তমানের এপিবিএনের এই তিনজনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব। ৩১ জুলাই রাতে এই তিনজন শামলাপুর তল্লাশিচৌকির দায়িত্বে ছিলেন।

সোমবার দুপুরে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, সিনহা হত্যা মামলার তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যা মামলার সব আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। মামলার প্রধান তিন আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেসব তথ্যকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *