সিলেট সিটি করপোরেশনে কামরান আবারও মেয়র পদে লড়ছেন

0
mayor kamran

mayor kamran

সিলেট প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় কামরানকে দলীয় প্রধান এ নির্দেশ দেন। এর আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকেও সাবেক মেয়র কামরানের পক্ষে দলের সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয় প্রধানের এই নির্দেশনার পর আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত বলে মনে করছেন নেতারা। আর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সিলেটে কামরানকে নিয়ে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটলো। ফের নতুন করে কামরানকে নিয়ে উজ্জীবিত হতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা। ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অবশ্য কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের আগেও সিটি নির্বাচনে প্রার্থিতার বিষয়ে দলীয় প্রধানের ‘গ্রীন সিগন্যাল’ পেয়েছিলেন কামরান। ওই সময় কামরান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে ছিলেন।

din bodal 1

সূত্র জানায়, শনিবার দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভা হয়। সভায় নির্বাচন নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। এ সময় শেখ হাসিনা দুই জনকেই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে জেতার জন্য একমাত্র পথ হচ্ছে জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। শুধু বড় বড় মিছিল-মিটিং করে কোনো লাভ হবে না। ফল পাওয়ার জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে, উঠান বৈঠক করতে হবে। তবেই ফল পাওয়া যাবে। এদিকে- বৈঠক শুরুর আগে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি সিরাজকে কামরানের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন- দলের হাইকমান্ড থেকে কামরানকে নির্দেশনা দেয়া হবে। এ কারণে দলের সব পর্যায়ের নেতা ও কর্মীদের কামরানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তবে- বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলেননি। তিনি বলেন- আমি আগেও বলেছি, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আমাকে যেখানেই কাজ করতে বলবেন, আমি সেখানে কাজ করবো।’

সিলেটের গনমানুষের জনপ্রিয় নেতা কামরান বলেন- ‘আমি জনসম্পৃক্ত একজন কর্মী। জনগণই আমার সব। জনপ্রতিনিধি না হলেও এখনো মানুষের জন্যই কাজ করছি। নগরবাসী যেখানেই ডাকছেন সেখানেই ছুটে যাচ্ছি। দীর্ঘ দিন আমি সিলেটের মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। এখনও আছি। আগামীতেও আমি মানুষের সেবা করে যাবো।’ বদরউদ্দিন আহমদ কামরান সিলেট নগরবাসীর দীর্ঘ দিনের নেতা। তিনি পৌর কমিশনার, পৌর চেয়ারম্যান ও প্রথম মেয়রও হন। গত সিটি নির্বাচনে তিনি বর্তমান বিএনপি দলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে হেরে সিটি করপোরেশনের দীর্ঘ দিনের কর্তৃত্ব হারিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃত্ব হারালেও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। এখনো সরব কামরান। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি সিলেটে নানা অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকছেন।

ওদিকে- সিলেটে আওয়ামী লীগ ঘরানা থেকে অনেকেই মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা ও বেশ কয়েকবারের পৌর কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম। আসাদ উদ্দিন আহমদের পক্ষে এবারের ঈদে ব্যাপক পোস্টারিং করা হয়। তার বলয়ের নেতারাও ‘মেয়র পদে আসাদকে দেখতে চাই’ স্লোগানে নগরীতে পোস্টারিং করেন। পাশাপাশি ব্যানার, ফেস্টুনও বসান। সামাজিক মাধ্যমেও সরব ছিলেন নেতারা। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো পদপদবিতে কখনোই ছিলেন না সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম। তবে- সিলেটে অর্থমন্ত্রী বলয়ের নেতাদের ঘনিষ্ঠ তিনি। এ কারণে আওয়ামী লীগের হয়ে মেয়রপদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শনিবার দলীয় প্রধানের এমন ঘোষণায় তারা হোঁচট খেয়েছেন।

কামরান বলেছেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচন হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে- এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *