নারী অভিবাসীদের কল্যাণে আইনের খসড়া অনুমোদন

নারী অভিবাসীদের কল্যাণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার বিধান যুক্ত করে ‘ওয়েজ আর্নার্স বোর্ড আইন-২০১৭’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড আইন নামে মন্ত্রিসভায় তোলা হলেও ‘ওয়েজ আর্নার্স বোর্ড আইন’ নামে এর অনুমোদন হয়েছে।
আগে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল বিধিমালা-২০০২ দ্বারা পরিচালিত হতো। সেটিকে এখন আইনের আওতায় আনা হলো। আগে বিধি দ্বারা বোর্ড চললেও এখন আইনের মাধ্যমে চলবে। খসড়ায় ওয়েজ আর্নার্স বোর্ড প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই বোর্ডে ১৬ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব পদাধিকারবলে পর্ষদের সভাপতি। শফিউল আলম বলেন, ‘খসড়া আইনে নারী অভিবাসীদের জন্য একটি বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। বিদেশে কর্মরত কোনো নারী অভিবাসী কর্মী নির্যাতনের শিকার, দুর্ঘটনায় আহত, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে বিপদগ্রস্ত হলে তাকে উদ্ধার ও দেশে আনা, আইনগত ও চিকিত্সা সহায়তা দেওয়া, ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্দেশ্যে দেশে-বিদেশে হেল্প ডেস্ক ও সেফ হোম পরিচালনা করবে বোর্ড।’
দেশে প্রত্যাগত নারী অভিবাসী কর্মীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে বোর্ডের কাজ। এটা একটা স্পেশাল বিষয়, যা আইনে যুক্ত করা হয়েছে। প্রবাসীদের কল্যাণে প্রকল্প নেওয়া, বাস্তবায়নসহ বোর্ডকে ১২টি কাজ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী বোর্ড প্রবাসীদের মৃতদেহ দেশে আনা, দাফন-কাফন, প্রবাসীদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার কাজ করবে। তিনি বলেন, নতুন এই আইন কার্যকর হলে পরিচালনা পর্ষদকে দুই মাসে একবার সভা করতে হবে। পর্ষদের ১৬ জনের মধ্যে নয়জন উপস্থিতিতে কোরাম হবে।
এদিকে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় বিশ্বের ক্ষমতাধর একশ নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০তম হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐহিত্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অর্থাত্ মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অপরদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০১৮ সালের এই ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এবার ১৪ দিনের সাধারণ ছুটির মধ্যে চার দিন এবং নির্বাহী আদেশে আট দিনের মধ্যে তিন দিন শুক্র-শনিবার পড়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি তাদের নিজস্ব নিয়ম ও বিধি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয় বা সেসব অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের চাকরি সরকার কর্তৃক অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সেসব অফিস নিজেদের নিয়মে জনস্বার্থ বিবেচনা করে ছুটি ঘোষণা করবে।
এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে পায়রা বন্দর এলাকায় বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও চীনের দুইটি কোম্পানি মিলিয়ে যৌথ কোম্পানি গঠনের জন্য সংঘস্মারক ও সংঘবিধির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।