আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর্পোরেট কর হার কমানো হবে : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘আমরা স্বীকার করছি, বর্তমানে যে হারে কর্পোরেট কর নেয়া হয়, তা ব্যবসা-সহায়ক নয়। কিন্তু এখনও বিপুল সংখ্যক লোক না খেয়ে থাকছে। ফলে তাদের জন্যই উচ্চহারে কর নিতে হচ্ছে। তবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর্পোরেট কর হার কমানো হবে।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেট কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বাড়ানো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন, বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজিজ খান, সহসভাপতি আনিস এ খান প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে কর্পোরেট কর বেশি। এটি একেবারে অযৌক্তিক নয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪২ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়। কিন্তু বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষের কথা মাথায় রেখে উচ্চ কর নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কর্পোরেট কর কাঠামোতে সংস্কার আনা হবে। যতটুকু সম্ভব কর কমানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতে কীভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা করছে সরকার। এজন্য সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো হচ্ছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের পথ তৈরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে দেশের সব মহলের দাবি রয়েছে। বর্তমানে একটি কোম্পানি ১০০ টাকা মুনাফা করলে সরকারকে ২৫ থেকে ৪৫ শতাংশ কর দিতে হয়। এতে কোম্পানির নিট মুনাফা কমে যায়। এসব কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে দারিদ্র্যের হার কমছে। আগামীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা হবে। বর্তমান সরকারের আমলে করা শেয়ারবাজারের বিভিন্ন সংস্কারের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, দেশের শিল্প খাতে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে অর্থায়নের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের অবদান মাত্র ১০ শতাংশ। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকায় তা ৫০ শতাংশের ওপরে। ফলে শিল্পায়নে পুঁজি সংগ্রহের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারকে আরও সম্পৃক্ত করতে হবে।
আজিজ খান বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় কয়েকটি বাধা রয়েছে। প্রথমত, দেশে ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট কনভার্টের সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত, কর্পোরেট কর বেশি। এছাড়া কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণা করলে ওই লভ্যাংশের আবার কর রয়েছে। এসব বাধা দূর হলে বিদেশিরা বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, শিল্পায়নে শেয়ারবাজারের অংশগ্রহণ একেবারেই কম। বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের বাজারমূলধন মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২২ শতাংশের সমান। কিন্তু উন্নত দেশে তা ১০০ শতাংশের বেশি।
অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য সচেতনতা বাড়াতে অন্য বক্তারা বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।