“ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া রেলওয়ে ষ্টেশন ও উন্নয়ন’’

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার অন্তর্গত অবহেলিত একটি রেলওয়ে ষ্টেশনের নাম তেলিয়াপাড়া। যেখানে জড়িয়ে আছে ‘৭১ এর রণাঙ্গনের ইতিহাস। আরো আছে আগুনে পুরানো, বুলেটের আঘাতে ক্ষত- বিক্ষত লাশের চিহ্ন। আজ অনেক দুঃখের সহিত বলতে হচ্ছে যে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কয়দিন যাবৎ এই রেলওয়ে ষ্টেশনের ব্যাপারে অনেক লেখালেখি করেছি। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ের সুনজরে আনতে পেরেছি বলে আমার মনে হয়না।
যাক, আশা করি আমাদের সিলেট বিভাগের সচেতন মহল এব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে আমার বিশ্বাস । । সাবেক সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় সিলেট-আখাউড়া রেল লাইনের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়ায় শত বছরের ষ্টেশন মাষ্টারের ঘরটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তিনি আজ আমাদের মাঝে বেঁচে নেই । ফলে শত শত যাত্রীকে চরম দূর্ভোগের মধ্যে দিয়ে এ ষ্টেশন থেকে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ ষ্টেশনে কোন মাষ্টার বা কর্মচারী না থাকায় ষ্টেশন ঘরটি তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ট্রেনের সময় সূচি বা রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে ষ্টেশনের মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় মন্ত্রী,এমপিরা এ ষ্টেশনকে বি-ক্লাসে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন করিনি কেউই। প্রায় শত বছর আগে এ ষ্টেশনটি তৈরী করা হলেও আধূনিকতার ছোয়া লাগেনি।
২৭ টি গ্রামের জনসাধারন ও তেলিয়াপাড়া ,সুরমা চা বাগানসহ ২২টি চা-বাগানের শত শত যাত্রীরা এই ষ্টেশন দিয়েই যাতায়াত করে। ষ্টেশনটিতে যাত্রীদের জন্য কোন সুযোগ সুবিধা নেই। এমন কি এই ষ্টেশনটিতে একজন বুকিং মাষ্টারও নেই, গেইটম্যান বর্তমানে মাষ্টারের কাজ করে। ষ্টেশনে মহিলাদের জন্য কোন শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নেই। শৌচাগার ও বিশ্রামঘরে লাল শাক চাষ এবং ষ্টেশন মাস্টারের ঘরে কাঠ মিস্ত্রির দোকান খুলেছে । তেলিয়াপাড়া রেল ষ্টেশনটি নামেই শুধু রেল ষ্টেশন কাজে নেই।
২০১১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন মাননীয় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী মরহুম এনামূল হক মোস্তফা শহীদ তেলিয়াপাড়া ষ্টেশন বাজারে স্হানীয় আওয়ামীলীগের এক মহা সমাবেশে জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন অচিরেই তেলিয়াপাড়া রেল ষ্টেশনটি বি-ক্লাসে রুপান্তর করা হবে । কিন্তু আজও রেল ষ্টেশনটি বি,ক্লাসে রুপান্তর করা হয়নি। ১৯৭১ সালে তেলিয়াপাড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ম্যানেজার বাংলো থেকে ৪ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর বন্টন এবং আনুষ্টানিক ভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঘোষনা দেয়া হয়। মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই স্থানটিকে দর্শনার্থীদের জন্য আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে রেল ষ্টেশনটি বি.ক্লাসে রুপান্তর করা জরুরী ।
এ বিষয়ে তেলিয়াপাড়াবাসী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে।
বাবুল হোসেন খান
সভাপতি
শাহজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ
মাধবপুর, হবিগঞ্জ।