আওয়ামী লীগের দুর্গ নামে পরিচিত হবিগঞ্জ-৪, যেখানে কখনো হারে না

বিশেষ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ-৪ আসনটি মাধবপুর-চুনারুঘাট নিয়ে গঠিত। আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ নামে পরিচতি। আসনটি যেন কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের জন্য সংরক্ষিত। ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু জেতেনি এমন উদাহরণ বিরল।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছেন। বিভিন্ন প্রকার উন্নয়ন মূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
বৃহত্তর সিলেটের প্রবেশদ্বার খ্যাত মাধবপুর আর শিল্প-কারখানা, পাহাড়, জীববৈচিত্র্য ও চা-বাগানে সবুজ গালিচা বিছানো চুনারুঘাটের সর্বত্র এখন প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানানো আর দোয়া চেয়ে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা দিচ্ছেন নানাভাবে। আটঘাট বেঁধে প্রচারণায় নেমেছেন অনেকে। আওয়ামী লীগ তাদের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাপক উন্নয়ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ আসনে টানা ৬ বার সংসদ সদস্য ছিলেন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ভাষা সৈনিক মরহুম এনামুল হক মোস্তফা শহীদ। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এ আসনে মনোনীত হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এডভোকেট মাহবুব আলী।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন।
অন্যদিকে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র, বীর মুক্তিযুদ্ধা শাহ মোঃ মুসলিম। ছাত্র জীবনে মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, মাধবপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন প্রায় ১৪ বছর, সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন প্রায় ৯ বছর, বর্তমানে তিনি সভাপতির পদে আসীন আছেন। তিনি স্কুল, কলেজ, ষ্টেডিয়াম সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে জড়িত আছেন। এছাড়াও তিনি প্রতিনিয়ত এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিও আশাবাদী আগামী একাদশ নিবাচনে প্রার্থী হতে।
আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর চুনারুঘাটের বাসিন্দা সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক, তরুণ আইনজীবী ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনও এলাকার উন্নয়নে নিজ র্অথায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ২৫টি ঝূঁকিপুর্ন রাস্তা ও তিনটি কাঠের তৈরী ব্রিজ এর কাজ সম্পন্ন করেছেন। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তিনিও আশা প্রকাশ করেন আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে।
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত এনামুল হক মোস্তফা শহীদের ছেলে নিজামুল হক মোস্তফা শহীদ রানাও বিভিন্ন দিকে পোস্টার-লিফলেট লাগিয়ে মাঠে রয়েছেন। বাবার ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। তিনি বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আছেন।
এছাড়াও সাবেক মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগ সাঃ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আকবর হোসাইন। আওয়ামীলীগ দলীয় নতুন প্রার্থীদের দাবি দলের সবুজ সংকেত পেয়েই তারা মাঠে রয়েছেন।
এ আসন থেকে নির্বাচনী মাঠে লড়াই করতে সবাই কোমর বেঁধেই মাঠে রয়েছেন। সামনে আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন মাত্র আর কয়েকদিন । শুধুমাত্র অপেক্ষার পালা কে হচ্ছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের নৌকার মাঝি।