দিল্লীতে টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়!
ঘরের মাঠে ভারত সব সময় অপ্রতিরোধ্য। তার ওপরে সফরের ঠিক আগে সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার দুঃসংবাদ স্তব্ধ করে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। ব্যক্তিগত কারণে তামিম ইকবাল আর ইনজুরিতে পড়ে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অনুপস্থিতির ধাক্কা তো ছিলই।
ভীষণ অস্বস্তি আর দুর্ভাবনা নিয়ে দিল্লিতে পা রাখা মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকদের নিয়ে বলতে গেলে আশাই ছিল না ক্রিকেট ভক্তদের। কিন্তু সব শঙ্কা দূর করে প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ বিজয়ী। ভারতের রাজধানীতে ৭ উইকেটের জয়ের মাহাত্ম্য বিশাল। ১৯তম ওভারে মুশফিকুর রহিমের টানা চারটি বাউন্ডারির কথা কখনও ভোলা যাবে না!
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর টস জয় দিয়ে সাফল্যের পথে যাত্রা শুরু। শফিউল ইসলামের প্রথম ওভারে রোহিত শর্মা দুটি চার মেরে ভয় ধরালেও শেষ বলে হয়ে যান এলবিডব্লিউ। ধাওয়ান-পান্তরা চেষ্টা করলেও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে হাত খুলে খেলতে পারেননি। শেষদিকে কিছুটা রান হলেও লক্ষ্য ছিল ধরাছোঁয়ার মধ্যেই।
১৪৯ রানের লক্ষ্যে শুরুতে লিটনকে হারালেও সৌম্য সরকার আর অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাঈমের সাহসী ব্যাটিং ভরসা দিয়েছে। ২০ বছরের তরুণ নাঈমের ব্যাট শুরু থেকেই ছিল আগ্রাসী। সঙ্গে যোগ হয়েছে সৌম্যর অভিজ্ঞতা। দুজনের ৪৬ রানের জুটিতে গড়ে ওঠে জয়ের ভিত। নাঈম ২৬ রান করে বিদায় নিলেও সৌম্য-মুশফিক এগিয়ে নিয়ে যান দলকে। দুজনের ৬০ রানের অমূল্য জুটি জয়ের পথে এগিয়ে নেয় অনেকটাই। সৌম্য ৩৯ রান করে আউট হলেও মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জয়ের হাসি নিয়েই ফিরেছেন মাঠ থেকে। ৬০ রানে অপরাজিত মুশফিকই জয়ের প্রধান নায়ক। জয়ের মুহূর্তটাও দুর্দান্ত। ছক্কা মেরে মাহমুদউল্লাহ এনে দিয়েছেন জয়ের সৌরভ।
টি-টোয়েন্টিতে আগের আট লড়াইয়ে ভারতকে কখনও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে জিততে জিততেও ১ রানে হারে যায় বাংলাদেশ। নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে দিনেশ কার্তিকের শেষ বলে ছক্কায় স্বপ্নভঙ্গ আজও ক্ষত-বিক্ষত করে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের হৃদয়। বেঙ্গালুরুর সেই হতাশা দূর হলো দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। এমন এক সময়ে জয়টা এলো, যখন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের শাস্তিতে সারা দেশ টালমাটাল।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ সব সময় ‘আন্ডারডগ’। সাকিবের অনুপস্থিতিতে এবার তো আরও চাপে ছিল দল। তবে সব শঙ্কা-হতাশা দূর করে বাংলাদেশ আজ বিজয়ে রঙিন, সাফল্যে উচ্ছ্বসিত।