করোনায় কমছে ডলারের দাম, চিন্তিত নয় ফেড

0
us-dollar

করোনার সংক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রে ঝুঁকিতে বাড়ায় মার্কিন ডলার। পড়ে যাচ্ছে ডলারের দাম। চলতি বছর অন্য মুদ্রার বিপরীতে ৮ শতাংশ দর কমেছে ডলারের।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্য এখন ঝুঁকিতে। এই মুহূর্তে দুর্বল হয়েছে ডলার—এমন মানসিকতা গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে ডলারের দর কমার পেছনে। বছরের পর বছর ধরে, যুক্তরাষ্ট্র অন্য অর্থনীতির চেয়ে বেশি দক্ষতা অর্জন করবে, এমন প্রত্যাশায় ডলারকে তার অন্য সমতুল্য মুদ্রার চেয়ে উন্নত করে রেখেছে। তবে দক্ষতার এই ব্যবধান এখন ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা করোনা-পরবর্তী পুনরুদ্ধারে বিশাল আকারের প্রণোদনা অর্থ ঘোষণা করেছেন। এর আগে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে তাঁদের প্রচেষ্টায় মূলত বেশ সফল। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় অঞ্চলগুলোতে প্রাদুর্ভাবের ফলে সেখানে দ্রুত অর্থনৈতিক পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সোসাইটি জেনারেলের বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ উভয় অঞ্চলেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগামী বছর বাধাগ্রস্ত হবে। ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৫ দশমিক ২ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে, অন্যদিকে ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। ২০২০ সালের সর্বনিম্ন অবস্থা থেকে ৯ শতাংশ বাড়বে ইউরোর দর।

লন্ডনে মিলেনিয়াম গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্টসের সহকারী প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিচার্ড বেনসন বলেন, বিনিয়োগকারীরা জানেন না যে করোনাভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী করছে, যা মার্কিন ডলারে টান দিয়েছে।

তবে ফেডারেল রিজার্ভ বলেছে যে তারা ডলারের রেট ঐতিহাসিক নিচে রাখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে ওই ব্যবধান সংকীর্ণ করতে চায়, যা বছরের পর বছর ধরে ডলারের দাম বাড়িয়ে তুলেছে। সোনার মতো নিরাপদ পণ্যে বিনিয়োগ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের। এ বছর সোনার দাম ২৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। দুর্বল ডলার সম্ভবত মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য স্বস্তি হিসেবে আসবে। কারণ ডলার দুর্বল হয়ে গেলে তাদের পণ্য বিদেশে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে। ডলারের দাম কম থাকলে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও লাভবান হয়। তাদের আয় দেশের মুদ্রায় রূপান্তর করা কম ব্যয়বহুল হয়। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবারই অভিযোগ করেছেন অন্য মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বেশি, যা মার্কিন অর্থনীতিকে চাপে রেখেছে। বিশেষ করে বরাবরই চীনের দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে মুদ্রা অবমূল্যায়নের অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প।

অবশ্য করোনার সময়ে ডলারের দাম কমলেও এটা স্থায়ী হবে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *