সব মানুষের রক্তই যদি লাল তাহলে সংঘাত কেন : এস কে সিনহা

0
cj-1-(1)20170510211538

cj-1-(1)20170510211538

দিনবদল ডেক্স: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘সব মানুষের রক্তই যদি লাল তাহলে সংঘাত কেন? আজকে কেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করি। প্রতিটি ধর্মই শান্তির কথা বলে। তবে আমাদের মধ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ধর্মের অপব্যাখ্যা করছে।’

বুধবার সন্ধ্যায় ‘বৌদ্ধধর্মের আলোকে বিশ্বশান্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, যারা ধর্মের অপব্যাখ্যা করছে তাদের কারণেই পৃথিবীতে এত সংঘাত হানাহানি। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা যার যার ধর্মের বাণী প্রচার করুন। যারা বিপথে গেছে তাদের পথে ফিরিয়ে আনুন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, তা বোঝা যায় আজকে সরকারি ছুটি ঘোষণা দেখে। একইভাবে দুর্গাপূজায়ও ছুটি ঘোষণা করা হয়। আমাদের অনুষ্ঠানে যেমন মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ আসে, তেমনি আমরাও তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাই।’ তিনি বলেন, ধর্মকে আমরা কোনো সীমার মধ্যে রাখতে চাই না। ধর্ম মানুষের জন্য। রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, আমার রক্ত, একজন মুসলিম ভাইয়ের রক্ত, একজন খ্রিস্টান ভাইয়ের রক্তের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমার ভাইয়ের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল থাকতে নাও পারে। কিন্তু একজন ভিন্ন ধর্মের ভাইয়ের রক্তের সঙ্গে আমার রক্তের গ্রুপ মিলে যেতে পারে।

মৌলবাদীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা আজকে ধর্মকে যেভাবে দেখছি আসলে কি ধর্ম তাই? পৃথিবীর একটি সুবিধাবাদী শ্রেণি তাদের মতো করে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। ছোটবেলা থেকে আমি যেভাবে ধর্মকে পালন করতে দেখেছি, তাতে একটি মৌলিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। এগুলোকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। প্রতিটি ধর্মের মূল কথায় হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করার কথা বলা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বৌদ্ধমূর্তি উপহার দেয়া হয়। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা নূহ আলম লেলিনের কাছে মুন্সিগঞ্জ জেলার জাদুঘরের জন্য অতীশ দীপঙ্করের দেহাবশেষ প্রদান করা হয়।

আলোচনা সভায় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তা আদর্শ সয়কা, শ্রীলঙ্কার রাষ্টদূত ইয়াসুজা গুনাসেকারা, রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ ধ্রুবেনাশানন্দজী মহারাজ, নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার বেনজামিন কস্তা, সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী ও হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ফারজানা ইয়াসমিন এবং আপিল বিভাগের (অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড) আইনজীবী মধুমালতি চৌধুরী বড়ুয়া প্রমুখ অংশ নেন।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি নাটক পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গণে উড়ানো হয় ফানুস।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *