অপহরণের ২৭ ঘণ্টা পর মায়ের কোলে ফিরল শিশু, অপহরণকারী গ্রেফতার

অপহরণের ২৭ ঘণ্টা পর ৩ মাস বয়সের বুকের ধনকে ফিরে পেয়ে মা ও বাবা আবেগ আপ্লুত। মাতৃক্রোড়ে তুলে দেয়ার পর শিশুটিকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে থাকেন। বুকের ধনকে কেড়ে নেয়ায় বাবা-মার চোখে নেমে আসে অন্ধকারের অমানিষা। ঘটনাটির বর্ণনা দিয়ে শিশুটির মা রিতু ইসলাম মিতু বলেন, ৭/৮ মাস আগে সুমন নামে এক মিস্ত্রি বাড়ির টিভি ও ফ্রিজ মেরামত করে দেয়ার সূত্র ধরে তার সঙ্গে পরিচয়। এরপর থেকে বাসার ইলেকট্রনিক সামগ্রীর সমস্যা হলে তাকে সংবাদ দেয়া হয়। বাসায় এসে সুমন মেরামত করে দিয়ে যান। গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সুমন তার বাসায় আসেন। দরজা খুলে দিতেই তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘ভাবী কেমন আছেন? কোন সমস্যা আছে কি না?’ কোন সমস্য নাই বলে তিনি ড্রইং রুমে বসতে দেন। এসময় কোলের শিনকে ড্রইং রুমের খাটের ওপর রেখে পাশের কক্ষে বাচ্চার কাপড় আনতে যান। ফেরৎ আসতে গিয়ে দেখেন মাঝের রুমের ছিটকিনি বাইরে থেকে আটকানো। তিনি দরজা খোলার কথা বলতেই পাশের রুম থেকে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন। পাশের ফ্ল্যাট থেকে হেমা নামের এক মহিলা এসে দরজার ছিটকিনি খুলে দেন। ড্রইং রুমের খাটের ওপর শিন নেই। সুমনকে রুমে না পেয়ে তিনি চিৎকার করে বাড়ির বাইরে বের হয়ে কাউকে পাননি।
ঘটনার পর শিনের বাবা শাখাওয়াত হোসেন বাসায় ছুটে আসেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর শিনের মায়ের মোবাইল ফোনে সুমন ফোন করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি পুলিশ বা র্যাবকে জানালে শিনের লাশ তাদেরকে দেয়া হবে-এমন হুমকিও দেয়া হয়।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১০ এর একটি টিম মুক্তিপণ পরিশোধের ফাঁদ পেতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের গোলাম বাজার কাঁচা বাজারের লাকড়ি ঘরের কাছ থেকে অপহরণকারী সুমনকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অপহরণের কথা স্বীকার করেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোলাম বাজারের হাবিব কলোনীর গলিতে হাবিব মিয়া’র দোতলার বাড়ির দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া আব্দুল হক নলীর বাসা থেকে শিশনকে উদ্ধার করে। শিশুটির শরীরে জ্বর আসায় সারাক্ষণই কান্নাকাটি করছিল। ঐ দিন রাতেই শিশুটিকে বাবা-মার কাছে ফেরৎ দেয়া হয়।