সন্ত্রাসবাদ দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান চ্যালেঞ্জ: চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা

সন্ত্রাসবাদকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের ধরন পাল্টেছে। তবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার চ্যালেঞ্জ প্রধান হিসেবেই রয়ে গেছে। তার মতে, সার্ক কিংবা বিমসটেক- আঞ্চলিক রাজনৈতিক ইস্যুতে সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া দুটি জোটের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেই।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্ট্যাডিজ (বিস) মিলনায়তনে একক বক্তৃতায় চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা এসব কথা বলেন।
‘রিকনসিলিং ডিভাইডেড সোসাইটিজ, বিল্ডিং ডেমোত্রেক্রসি অ্যান্ড গুড গভর্ন্যান্স লেসন ফ্রম শ্রীলংকা’ শীর্ষক বক্তৃতা শেষে তিনি উপস্থিত বিশিষ্টজনের প্রশ্নের জবাব দেন।
চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা বলেন, শ্রীলংকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আগে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ ছিল। সন্ত্রাসবাদীরা দেশের ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট করে দেশগুলোকে দুর্বল করছিল।
তিনি শ্রীলংকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, সেখানে এ সমস্যা দীর্ঘ সময় ধরে ছিল। তবে তার সরকারের সময়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়; যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষা, ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় উন্নয়নের মূল স্রোতে নিয়ে আসা হয়। ফলে বিভক্ত শ্রীলংকা ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে সমর্থ হয়।
তিনি বলেন, শ্রীলংকায় যেভাবে জাতিগত বিরোধ নিরসন করা হয়েছে, তা অন্য দেশের জন্যও একটি ভালো দৃষ্টান্ত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এখন দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহতা বাড়ছে। দেশগুলোকে পারস্পারিক ছোট ছোট মতপার্থক্য ভুলে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রতিটি দেশকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোরালো সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে হবে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের কোথাও জন ভিত্তি নেই। এ কারণে আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করা সম্ভব হলে সন্ত্রাসবাদী শক্তি দুর্বল হয়ে পড়বে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার কূটনীতিতে শ্রীলংকাকে সফলই বলতে হবে। তবে কখনও সিদ্ধান্তের কারণে ভারত, কখনও চীন বিরাগভাজন হয়। এর মধ্যে থেকেই শ্রীলংকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশকে কূটনৈতিক নীতি গ্রহণ করতে হয়।
বিস চেয়ারম্যান মুন্সী ফায়েজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আবদুর রহমান।