কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বারের চিকিৎসায় এগিয়ে এলেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর পুত্র

অসংখ্য অমর গানের শিল্পী আব্দুল জব্বার চিকিৎসার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন। ফেসবুকে একজনের স্ট্যাটাসের সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিল্পীর সহায়তায় এগিয়ে এলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর বড় ছেলে ও সানোয়ারা গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান।
বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন মহান এই শিল্পীর হাতে নগদ ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেন তিনি।
চেক প্রদানকালে মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা কেমন মানুষ! দেশের মহান গুণীজনকে তার পড়ন্ত বেলায় কেউ কদর করে না। অথচ মুক্তিযোদ্ধারা এই আব্দুল জব্বার, আপেল মাহামুদ, মাহমুদুন্নবীদের গান শুনে দেশকে হানাদারমুক্ত করেছিলেন। তাদের গান শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। এ শিল্পীর দুঃসময়ে সবার পাশে থাকা উচিত। আমি এই গুণী শিল্পীর জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার হারমোনিয়াম গলায় ঝুলিয়ে কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্ধুদ্ধ করেছেন। তখন স্বাধীন বেতারে করেছেন অসংখ্য গান। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আব্দুল জব্বার পুরো ভারতে বিভিন্ন স্থানে গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে গণসংগীত থেকে প্রাপ্ত ১২ লাখ টাকা স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পদক অর্জন করেছেন।
বর্তমানে তার কিডনির অবস্থা শোচনীয়, হার্টের ভাল্ব নষ্টসহ শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার চিকিৎসা করাতে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে।
শিল্পী আব্দুল জব্বার জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসাবাবদ ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। এখনও এত বড় অঙ্কের টাকা কীভাবে জোগাড় হবে?
তিনি বলেন, যখন লাইফ সাপোর্টে থাকব তখন দেখতে যাবেন! মারা গেলে শহীদ মিনারে নিয়ে ফুল দেবেন! দাফন করার সময় রাষ্ট্রীয় স্যালুট দেবেন! এরপর কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, এসবের আমার কিছু দরকার নেই। আমি আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
এদিকে সূত্র জানায়, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বরাবরও সাহায্যের একটি আবেদন জানিয়েছিলেন শিল্পী আব্দুল জব্বার। আবেদনটি বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ের দফতর থেকে ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডে পাঠানো হয়। তবে প্রবাসী ছাড়া অন্য কাউকে সাহায্য করার নিয়ম না থাকায় সেখান থেকে শিল্পীকে সাহায্য করা সম্ভব হয়নি।