ভাষা আন্দোলনে উত্তপ্ত দার্জিলিঙ, আটকে পড়েছেন পর্যটকরা

0
1497016865

1497016865

গোটা পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে বাংলা ভাষা পড়াতে হবে বলে মমতা ব্যানার্জি যে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিলেন, এর বিরুদ্ধে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা কিছুদিন ধরেই ক্ষোভ জানাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙে মমতার উপস্থিতিতে রাজ্য মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের সময় গোর্খাদের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে চরম সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সে সময় বেশ কয়েকটি পুলিশ এবং সরকারি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। তাদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের ৫২ জন কর্মী জখম হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চার্জ ও প্রচুর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। প্রায় ৪৫ বছর পরে দার্জিলিংয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার ঐ বৈঠক হচ্ছিল।

বৈঠক চলাকালীনই গোর্খাদের একটা অবস্থান বিক্ষোভ চলছিল। যদিও সরকার এটা নির্দিষ্ট করে বলেছে যে পাহাড়ের ক্ষেত্রে বাংলা ঐচ্ছিক বিষয় থাকবে, তবুও সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই পাহাড় উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল কিছুদিন থেকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ওই বিক্ষোভ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে হঠাত্ই পুলিশের দিকে পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। সেখানেই সংবাদ সংগ্রহের কাজে উপস্থিত ছিলেন হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকার সাংবাদিক প্রমোদ গিরি।

তিনি বলছিলেন, “আমরা যখন রাজভবন থেকে ক্যাবিনেট মিটিং, তার প্রেস কনফারেন্স কভার করে হেঁটে ভানুভবনের দিকে চলে এসেছিলাম। সেখানেই বিক্ষোভ চলছিল। আমরা ভেতরে ঢুকেছিলাম মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে। তখনই, তিনটে নাগাদ ওই বিক্ষোভেই মমতা ব্যানার্জীর কুশ-পুতুল পোড়ানো হচ্ছিল। হঠাত্ই কেউ কেউ পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পুলিশ প্রথম ১৫-২০ মিনিট কিছুই করে নি, তারা একটু পিছু হঠে গিয়েছিল। কিন্তু পাথর ছোঁড়া বাড়তে থাকায় প্রথমে লাঠি চার্জ করে, তারপরে প্রচুর টিয়ার গ্যাস শেল ফাটায়। পুলিশের গাড়ি, সরকারি বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেযা হয় গোটা ঘটনা চলেছে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক।”

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব জানিয়েছে, তাদের বদনাম করার জন্য কেউ পাথর ছুঁড়েছে পুলিশের দিকে, তাদের কোনও কর্মী সমর্থক ওই কাজ করেন নি। শুক্রবার ১২ ঘনটার পাহাড় বন্ধের ডাক দিয়েছে জনমুক্তি মোর্চা। ওই সহিংসতায় উত্তরবঙ্গ ও দার্জিলিং পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ৫২ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে। বিকেল থেকেই ছয় কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী আর সন্ধ্যায় এক কোম্পানি সেনা নামানো হয়েছে, যারা বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিচ্ছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *