স্বাস্থ্য সুরক্ষা, চিকিৎসা, সৌন্দর্য চর্চা- মধুর ব্যবহার

0
modu

modu

মধুকে বলা হয় সর্বরোগের ওষুধ। স্বাস্থ্য সুরক্ষা, চিকিৎসা, সৌন্দর্য চর্চা- মধুর ব্যবহার সবখানে। মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নিই মধুর উপকারিতা সম্পর্কে-

ওজন কমায় মধু
প্রতিদিন সকালে মধু খেলে শরীরের বাড়তি ওজন কমে। বিশেষ করে যদি সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে ওজন কমে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়া প্রতিদিন নিয়মিত মধু খেলে পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে, শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের হয়ে যায়।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়

ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেলে তা মস্তিষ্কের কাজ সঠিক ভাবে চালাতে খুব সাহায্য করে। এতে মস্তিষ্কের শক্তি তথা বুদ্ধি বাড়ে। যেকোনো কাজে মস্তিষ্ক আগের চেয়ে বেশি সক্রিয় হয়। যাদের মাথা খাটিয়ে কাজ করতে হয়, তাদের জন্য মধু এনে দেয় নতুন উদ্যম ও সৃষ্টিশীলতা।

হৃৎপিণ্ডের সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করে
মধুর সাথে দারচিনি গুঁড়া মিশিয়ে খেলে তা রক্তনালীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। রক্তনালী পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। মধু ও দারচিনির এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ঝুকি অনেকাংশে কমে যায়।

ব্যথা নিরাময় করে
শরীরের জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা থাকলে তা থেকে দ্রুত মুক্তি মেলে মধু খাওয়ার মাধ্যমে। যে অবাঞ্ছিত রসের কারণে বাতের জন্ম, সেই রস অপসারাণে মধু বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে বাতের ব্যাথা সেরে যায়।

হজমে সাহায্য করে
মধু পেটের অম্লীয়ভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা অনেকাংশে দূর করার জন্য প্রতিবার ভারী খাবারের আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। ভালো ফলের জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খেতে পারেন।

শক্তি বাড়ায়
মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি। এই প্রাকৃতিক চিনি শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাদের মিষ্টির প্রতি ঝোক রয়েছে, তারা অন্য মিষ্টি খাবারের বদলে মধু খেতে পারেন।

রক্ত পরিষ্কার করে
এক গ্লাস হালকা গরম পানির সাথে এক বা দুই চামচ মধু এবং এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন। এটা রক্ত ও রক্তনালী পরিষ্কার করে।

হাঁপানি রোধ করে
আধা গ্রাম গুঁড়া গোলমরিচের সাথে সমপরিমাণ মধু এবং আদা মিশিয়ে দিনে অন্তত তিন বার খেলে হাঁপানির সমস্যা অনেকটা দূর হয়।

গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি
হজম সমস্যার সমাধানেও কাজ করে মধু। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন তিন বেলা দুই চামচ করে মধু বেশ উপকারী। এতে করে গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি মেলে সহজেই।

আয়ু বৃদ্ধি করে
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নিয়মিত যারা মধু ও সুষম খাবারে অভ্যস্ত, তারা তুলনামূলক বেশি কর্মক্ষম।

ত্বক নমনীয় করে
মধু হিউম্যাকটেন্ট যৌগে সমৃদ্ধ। এই যৌগটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার কাজ করে এবং ত্বকের উপরিভাগের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে। হিউম্যাকটেন্ট যৌগটি ত্বককে নমনীয় করতেও সাহায্য করে। ফলে ত্বক থাকে দীর্ঘদিন বার্ধক্যের ছাপ মুক্ত।

কাশি নিরাময়ে
দীর্ঘমেয়াদী হোক আর স্বল্পমেয়াদী হোক, যাদের খুসখুসে কাশির সমস্যা আছে, তারা প্রতিদিন এক চামচ আদার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন।

ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গার চিকিৎসায়
মধু শরীরের ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। মধুতে মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গায় ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। কোথাও পুরে, কেটে গেলে ক্ষত স্থানে মধুর একটি পাতলা প্রলেপ দিয়ে দিন। ব্যথা কমবে ও দ্রুত নিরাময় হবে।


প্রকৃতিক সানস্ক্রিন মধু

মধুতে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরের চামড়াকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। অনেকটা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের কাজ করে মধু। রোদে পোড়া ত্বককে স্বাভাবিক করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক চামচ মধুর সাথে পানি মিশিয়ে প্রতিদিন মুখে ফেস প্যাকের মতন লাগান। রোদে পোড়া জনিত কালো দাগ দূর হয়ে চেহারা হবে ঝলমলে। সূত্র: বোল্ড স্কাই

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *