উন্নত সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলের সহযোগিতাও চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

সারা দেশে এবার নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঈদের আনন্দ প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যান, সেটাই তার সরকার চায়।
সোমবার ঈদের সকালে গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উন্নত সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আবাল বৃদ্ধ-বনিতা সকলকে আমি এটুকুই বলব, সকলের সহযোগিতা আমরা চাই। এই বাংলাদেশকে যেন আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।”
গত বছর ঈদুল ফিতরের ঠিক এক সপ্তাহ আগে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন। এরপর ঈদের সকালে শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় জামাতের ঠিক আগে আগে পুলিশের চৌকিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন এক নারীসহ চারজন।
ওই দুই হামলার প্রেক্ষাপটে বছরজুড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অর্ধশতাধিক জঙ্গি নিহত হয়। এবারও ঈদে নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার গণভবনে বিচারপতি ও কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “এবারের ঈদ অত্যন্ত ভালভাবে গেছে আল্লাহর রহমতে, শান্তিপূর্ণভাবে। প্রত্যেকটা ঈদের জামায়াত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, দেশবাসী যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সেজন্য প্রত্যেক এলাকার মানুষ সচেতন ছিল, সচেষ্ট ছিল।
“আল্লাহর রহমতে অত্যন্ত ভালভাবে ঈদের জামাতগুলি শেষ হয়েছে। কোনোরকম অঘটন ঘটেনি। এজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে। দেশের মানুষ এখন আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছে।
“বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ মর্যাদা ফিরে পেয়েছে; যে মর্যাদা হারিয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর, আজকে আবার বাংলাদেশ জেগে উঠেছে।”
দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করে, গৃহহীনদের আবাসনের ব্যবস্থা করে এবং ভূমিহীনদের জমি দিয়ে সরকার সার্বিকভাবে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে সারা দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে।
“আমরা আশা করি, আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য আরও পরিবর্তন হবে, আরও উন্নত হবে এবং আমরা সে লক্ষ্য নিয়েই বাজেট দিয়েছি।”
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ঈদ সবার জীবনে আনন্দ বয়ে আনুক, সেটাই আমরা চাই। ঈদের দিনে সকলের প্রতি মোবারকবাদ জানাই।”
গণভবনের মাঠে সামিয়ানা টাঙিয়ে অস্থায়ী প্যান্ডেলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই আয়োজন করা হয়।
সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী মাঠে এলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
এরপর সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু হয়। সেমাই, মিষ্টান্নসহ বেশ কয়েক পদের খাবারে আপ্যায়িত করা হয় অতিথিদের।