কষ্টে দিন কাঁটাতে হচ্ছে মেহেজাবিনকে

0
unnamed (1)

সঙ্গনিরোধকাল চলছে মেহজাবীন চৌধুরীর। পাশের ঘরে থাকা স্বজনকে নিজের ঘর থেকে ফোন করছেন। খাবার টেবিলের বদলে একা একা নিজ ঘরে বসে খেতে হচ্ছে তাঁকে। তারপর নিজ হাতে নিজের থালা ধুতে হচ্ছে। ঘরে থেকেও ঘরের মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ভীষণ কষ্টকর মনে হচ্ছে এই অভিনেত্রীর।

৮ জুলাই উত্তরায় একটি শুটিং ইউনিটে করোনা শনাক্ত হয় ইউনিটের দুজন সদস্যের। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করা হয় শুটিং। তারপর থেকে ওই ইউনিটের সবাই কোয়ারেন্টিনে। সেই দলের অন্যতম মেহজাবীন। ১০ জুলাই করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন তিনি। তাতে অবশ্য নেগেটিভ ফল এসেছে। তিনি কোয়ারেন্টিন বা সঙ্গনিরোধকাল পার হওয়ার আগে আরেকবার পরীক্ষা করাবেন। তিনি জানান, সুস্থ আছেন। শারীরিক কোনো সমস্যা নেই, করোনার কোনো লক্ষণও নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের শুটিং ইউনিটে একজনের করোনা শনাক্ত হয় ৮ জুলাই। দুই দিন পর আমি করোনা পরীক্ষা করেছিলাম। ফল নেগেটিভ এসেছে। যদিও পরীক্ষাটি কাছাকাছি সময়ে করা হয়েছে। এ কারণে কোয়ারেন্টিনের ১৪ দিনের মধ্যে আরেকবার পরীক্ষা করাব।’

কোয়ারেন্টিনে কীভাবে কাটছে তাঁর? সেই অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুবই বাজে। করোনার কারণে শুটিংয়ে যেতাম না। পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম, সময় কাটাতে পারতাম। এক টেবিলে বসে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া হতো। এখন তো দরজা বন্ধ করে একলা এক রুমে থাকছি। একই বাসায় থেকে পরিবারের কারও সঙ্গে দেখা করা যাচ্ছে না। ইচ্ছা করলেও কারও কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। দরজার বাইরে খাবার রেখে দেওয়া হচ্ছে। সেই খাবার নিয়ে নিজের ঘরে একা বসে খেতে হচ্ছে। খাবার শেষে বাসনগুলো নিজে ধুতে হচ্ছে। মন চাইলে রুমে বসেই ফোনে বলতে হচ্ছে পরিবারের সবার সঙ্গে। কী যে এক যন্ত্রণা, বলে বোঝানো যাবে না। খুব মানসিক কষ্টে আছি।’

বদ্ধ ঘরে কাটানো দিনগুলোকে ক্যামেরাবন্দী করেছেন মেহজাবীন। সেগুলোর ভিডিও নিজের চ্যানেলে ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার পরিকল্পনাও আছে তাঁর। মেহজাবীন বলেন, ‘একলা ঘরে সময় কাটতেই চায় না। তারপরও অনলাইনে কিছু কাজ করছি। নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য নিজে নিজে ভিডিও বানাচ্ছি। সম্পাদনার কাজ কিছুটা শিখেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছি। এর মধ্যে তিনটি ভিডিও করেছি, কোয়ারেন্টিনের পরে ভিডিওগুলো নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তুলব।’

শুটিং ইউনিটে করোনা শনাক্ত হওয়ার খবরে প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয়েছিলেন মেহজাবীন। তিনি বলেন, ‘যে দুজন শনাক্ত হয়েছেন, তাঁরা দুজন মেকআপ রুমে আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। দুই দিনে ছয়–সাত ঘণ্টা একসঙ্গে কেটেছে আমাদের। ওই রুমে এসি চলছিল। শুনেছি, এসির বাতাসে এই ভাইরাস বেশি ছড়ায়। সুতরাং আমার আর অপূর্ব ভাইয়ের আক্রান্ত হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়।’

কোয়ারেন্টিন শেষে কি আবার কাজ শুরু করবেন মেহজাবীন? সেটি কি ঝুঁকিপূর্ণ হবে না? কাজ বাদ রেখে ঘরে বসে থাকলে তো চলবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাজ তো করতেই হবে। তবে যতটুকু পারা যাই, সাবধানতা অবলম্বন করে ঝুঁকির মধ্যেই কাজ করতে হবে। ভেবে দেখলাম, এ জীবন মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে। কারণ, ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত কত দিন এই পরিস্থিতি চলবে, তা আমরা কেউই জানি না।’

বেশ কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে মেহজাবীনের। ঈদে সেগুলো দেখা যাবে টেলিভিশনে। সে কারণে ঈদের আগ পর্যন্ত কাজের শিডিউল করা ছিল তাঁর। কোয়ারেন্টিন পর্ব শেষে ২২ জুলাইয়ের পর কাজ শুরু করবেন মেহজাবীন। এই ঈদে তাঁকে দেখা যেতে পারে ‘কেন?’, ‘অপরূপা’, ‘স্বার্থপর’ ও ‘তোমায় নিয়ে’তে। নাটকগুলো ঈদুল ফিতরের বেশ কয়েক মাস আগে শুটিং করা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *