দেড় শতাধিক জেলে নিখোঁজ কক্সবাজারে

0
Jele-Pic20170601085321

Jele-Pic20170601085321

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় মোরার তাণ্ডবে ১১টি মাছ ধরার ট্রলারসহ দেড় শতাধিক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। বোট মালিক সমিতি এবং কোস্টগার্ড নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে।

বুধবার রাতে কুতুবদিয়ার পশ্চিম সাগর থেকে নৌবাহিনী এবং ফিশিং বোটের লোকজন ২৫ জেলেকে উদ্ধার করেছে। তবে নিখোঁজের বিষয়ে কোনো তথ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজি আব্দু রহমান।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ঘুর্ণিঝড় মোরার তাণ্ডবে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ১১টি মাছ ধরার ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। এসব ট্রলারে অন্তত দেড় শাতাধিক জেলে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বোট মালিক সমিতি।

তবে বুধবার রাতে কুতুবদিয়ার পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর (জাহাজ খাদেম) সদস্যরা ২০ জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে। এসময় আরো ৫ জন জেলেকে ফিশিং বোটের লোকজন উদ্ধার করেছে।

নিখোঁজ বোটগুলোর মধ্যে মহেশখালীর আব্দুর শুক্কুর কমিশনারের মালিকানাধীন এফবি ওয়ালিদ নামে ২টি এবং এফবি সায়েদ নামে ১টি, খোরশেদের মালিকানাধীন এফবি মিতালি, মহেশখালীর পুটিবিলা এলাকার বাঁশি মাঝির ১টি। এছাড়া সদর উপজেলার খুরুশকূল মামুন পাড়ার লুলাইয়া বহদ্দারের ২টি বড়শি বোট নিখোঁজ রয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলায় ৪টি বোট নিখোঁজ রয়েছে। তবে এসব ট্রলারের মালিকানা নিশ্চিত করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।

বোট মালিক আব্দুর শুক্কুর জানান, ঘূর্ণিঝড় শুরুর ৩দিন আগে আমার মালিকানাধীন ৩টি নৌকা নিয়ে ৬১ জন মাঝিমাল্লা সাগরে মাছ ধরতে যায়। এখনো তাদের কোনো খোঁজ খবর নেই। আমি নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান ও উদ্ধারের জন্য একটি ট্রলার সাগরে পাঠিয়েছি।

এদিকে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির এক সভায় জানানো হয়, এ পর্যন্ত তাদের সমিতিভূক্ত ৪টি নৌকা নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়াও সমিতির বাইরে ২টি বড়শি বোটও নিখোঁজ রয়েছে। এ ব্যাপারে সমিতির তত্ত্বাবধায়নে বোট মালিক পক্ষ থানায় সাধারণ ডাইরি করা হবে বলে জানিয়েছেন বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, আমাদের সমিতিভূক্ত যেসব নৌকা রয়েছে সেখানে ৪টি নৌকা নিখোঁজের খবর আমরা জানতে পেরেছি। তবে এখনো নিহতের কোনো খবরা-খবর আমাদের কাছে নেই। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

কক্সবাজার কোস্টগার্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে ২টি জাহাজ কক্সবাজারের উপকূলে এসে উদ্ধারের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। শতভাগ উদ্ধার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাবেন তারা।

কোস্টগার্ড কক্সবাজার স্টেশনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার নয়ন বড়ূয়া বলেন, আমাদের কাছে নিখোঁজের কোনো তথ্য নেই। তবে শতভাগ নিশ্চিত হতে চট্টগ্রাম থেকে ২টি নৌবাহিনীর জাহাজ কক্সবাজারের উপকূলে টহলে আসবে। ভাসমান নৌকা কিংবা জেলে উদ্ধারের জন্য কাজ করবে তারা।

কুতুবদিয়া উপজেলা অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে কুতুবদিয়ার পশ্চিম সাগর থেকে নৌবাহিনীর সদস্যরা ২০ জন এবং ফিশিং বোটের সদস্যরা ৫ জন জেলেকে উদ্ধার করছে। এদের মধ্যে ২০ জন কুতুবদিয়ার অন্য ৫ জন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাসিন্দা বলে জানানো হয়।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন চৌধুরী বলেন, বুধবার রাতে কুতুবদিয়ার পশ্চিম সাগর থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং ফিশিং বোটের লোকজন ২৫ মাঝিমাল্লাকে উদ্ধার করে। তৎমধ্যে ২ জন বাঁশখালী এলাকার এবং বাকি ২৩ জন কুতুবদিয়া এলাকার বাসিন্দা। তাদেরকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় জেলেদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, কুতুবদিয়া উপজেলার ৪টি নৌকা নিখোঁজ রয়েছে।

কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজি আব্দু রহমান বলেন, যতজন জেলে নিখোঁজ ছিল তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এখন আর কোনো নিখোঁজের তথ্য আমাদের কাছে নেই। তারপরও আমরা খবর পেলে দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাব।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *