ধর্ষকদের জুতাপেটা ও এক লাখ টাকা জরিমানা

0
ref

ref

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী এলাকায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী গণধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় কাউন্সিলর ও মাতাব্বররা উঠে পড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার পরীক্ষা বাদ রেখে মেয়েটিকে গর্ভপাত ঘটাতে ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ধনবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের রূপশান্তি পশ্চিম এলাকার এ ঘটনায় বর্তমান কাউন্সিলর জাকারিয়া বকল, সাবেক কাউন্সিলর হেলাল বকল, স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মামুন, ধর্ষক আলামিনের বাবা মাহতাবসহ স্থানীয় কয়েকজন মাতব্বর ধর্ষকদের বাঁচাতে প্রহসনের বিচার করেছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নির্যাতিত মেয়েটির পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, রূপশান্তি এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে ছাগল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম (৩০) প্রতিবেশী অসহায় এক পরিবারের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে (১৩) প্রেমের ফাঁদে ফেলেন এবং তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। শারীরিক সম্পর্কের সময় আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলার নাটক সাজিয়ে রফিকুল ওই ছাত্রীকে তার গ্রুপের অন্য সদস্যদের ভোগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেন। এ সুযোগ নিয়ে রফিকুলের সহযোগী একই এলাকার রহমান আলী মন্ডলের ছেলে জিয়াউল হক (৩২) ও মাহতাব আলীর ছেলে আল আমিন (৩২) ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এর ফলে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে শালিসি বৈঠকে ধর্ষকদের জুতাপেটা ও এক লাখ টাকা জরিমানা করাসহ ওই ছাত্রীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জরিমানার অর্ধেক ৫০ হাজার টাকা ওই ছাত্রীর পরিবারকে দিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর নির্দেশ দেয়াসহ ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য চাপ দেয়া হয়।

তবে এ নিয়ে ধনবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকারিয়া বকল ঘটনাটি মীমাংসার কথা অস্বীকার করেছেন।

এদিকে কয়েকদিন যাবৎ ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছিল। মঙ্গলবারও সে পরীক্ষা দিয়েছে। তবে বুধবার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় সে অনুপস্থিত ছিল।

ধনবাড়ী কলেজিয়েট মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম মাসুদ কবীর ওই ছাত্রী অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই ছাত্রীর কোনো অভিভাবককে পাওয়া না গেলেও তার ছোট ভাই ইয়াছিন (৭) জানায়, তাকে ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ধনবাড়ী পৌরসভার মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন বলেন, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে বাদী-বিবাদী কেউ এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেনি।

এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তু ঘটনাটি নিয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনাটির খোঁজ নেয়ার জন্য থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ফারুকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *